ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সাতক্ষীরার বাজারে নষ্ট হচ্ছে কুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫
সাতক্ষীরার বাজারে নষ্ট হচ্ছে কুল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাতক্ষীরা: ‘ট্রাক ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় জেলার বাইরে কুল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় সব বাজারে কুল আর কুল।

কিন্তু কোনো ক্রেতা নেই।

গত মৌসুমে যে কুল ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, এই মৌসুমে তা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তাও মানুষ নিতে চাচ্ছে না। অধিকাংশ দোকানির কুল শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। লোকসানে শেষ হয়ে যাচ্ছে পুঁজি-পাটা।

২০ দলীয় জোটের টানা হরতাল-অবরোধে সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত কুল জেলার বাইরে পাঠাতে না পারায় লোকসানে পড়ে এভাবেই হতাশার কথা বাংলানিউজকে বলছিলেন সাতক্ষীরার বড় বাজারের শাওন এন্টার প্রাইজের মালিক ফজর আলী খোকা।

তিনি বলেন, পাইকারদের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতাদেরও একই অবস্থা। প্রতিবছর ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, খুলনা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ট্রাক সাতক্ষীরার কুল যায়। কিন্তু এ বছর যাচ্ছে না।

সাতক্ষীরার বড় বাজার, পাটকেলঘাটা বাজার, ঝাউডাঙ্গা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গাতেই বাউকুল, অ্যাপেল কুল, মিষ্টি কুল, নাইন্টি কুল, বিলেতি কুলের ছড়াছড়ি। কিন্তু ক্রেতা নেই।

প্রতি কেজি কুল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা দরে। যা গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। ভরা মৌসুমে কুলের দাম না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কুলের পাইকারি বিক্রেতা মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে জানান, সাতক্ষীরায় বরাবরই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুল উৎপাদন হয়। দেশজুড়ে সাতক্ষীরার কুলের চাহিদাও বেশ। কিন্তু চলতি মৌসুমে টানা অবরোধ ও হরতালে জেলার বাইরে কুল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

সাতক্ষীরায় যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা রয়েছে, বাইরে পাঠাতে না পারায় স্থানীয় বাজারগুলোতে কুল উঠেছে চাহিদার কয়েক গুণ বেশি। তাই দাম নেই। যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতেও কেউ কিনতে চাচ্ছে না। বাজারেই শুকিয়ে লাল হয়ে নষ্ট হচ্ছে কুল। এতে সর্বশান্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরো বলেন, উৎপাদন মৌসুম শুরুতে যে কুল মণ প্রতি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে। এখন তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৬০০ থেকে ৬৪০ টাকা দরে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আর সর্বোচ্চ এক মাস কুল উঠবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। কারণ স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে কুল বিক্রি প্রায় শূন্যের কোটায়। তাই অধিকাংশ কুল অবিক্রিত থাকছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুল গফুর বলেন, সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে ৩০০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু পরিবহন সমস্যার কারণে বাইরে পাঠাতে না পারায় কুল ব্যবসায়ীদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।