ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডাচবাংলা ব্যাংকের শপিং কার্ড প্রতারণা

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২২ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৫
ডাচবাংলা ব্যাংকের শপিং কার্ড প্রতারণা

ঢাকা: পোশাকখাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম স্ত্রীর জন্য ডায়মন্ড রিং কিনতে গিয়েছিলেন বায়তুল মোকাররম মার্কেটে। আপন ডায়মন্ড থেকে ২৫ হাজার টাকার একটি রিং কেনার সিদ্ধান্তও নেন।

কিন্তু সমস্যা হলো টাকা পরিশোধ নিয়ে।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড (ডিজিটাল নেক্সাস) থেকে মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে তিনি পড়লেন বিপাকে।  

দোকান কর্তৃপক্ষের কাছে ডাচ বাংলা ব্যাংকের পয়েন্ট অব সেল না থাকায় স্ত্রীর পছন্দের রিং কিনতে গিয়ে ফেরত আসতে হয়েছে রফিকুল ইসলামকে।

শুধু একা রফিকুল ইসলাম নন। তার মত আরও অনেক গ্রাহক স্বপ্ন, মোস্তফা মার্ট, ইনফিনিটিসহ বহু জনপ্রিয় আউটলেটে গিয়ে পণ্য কিনে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম শপিং কার্ড দিয়ে মূল্য পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেকে ভুক্তভোগী বাংলানিউজকে এমন অভিযোগ জানিয়েছেন।  

অথচ প্রতিদিনই গ্রাহককে ফোন করে ডিজিটাল নেক্সাসের সুবিধার কথা জানিয়ে পুরোনো কার্ড বদল করে নতুন কার্ড নিতে তাগিদ দিচ্ছে ডাচ বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ডাচ বাংলা ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকসেবায় নতুন মাত্রা যোগ করতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে চালু করেছে ডাচ বাংলা ব্যাংক এটিএম/শপিং কার্ড (নেক্সাস ডিজিটাল)।
 
এই কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহক জুয়েলারি, সুপারশপ, ডেসকোর বিদ্যুৎ বিল, বিমান-বাসের টিকিট ও বইয়ের দোকান আট হাজার নানা আউটলেটের পণ্যের দাম পরিশোধ করতে পারার কথা।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে আপন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের শো-রুমে গিয়ে জানতে চাইলে বিক্রয়কর্মী আজাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটিএম কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধে ডাচ বাংলা ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের কোনো চুক্তি হয়নি।
 
ডাচ বাংলা ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের ফার্স্ট অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট বিপ্র দাস ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, গ্রাহকের সুবিধার্থে আমরাই প্রথম এটিএম শপিং কার্ড (ডিজিটাল নেক্সাস) চালু করেছি। আমাদের আট হাজার মার্চেন্ট (যেসব দোকানে ডাচ বাংলার কার্ড দিয়ে বিল দেওয়া যায়) আছে।
 
তাই সব মার্চেন্টের কাছে পয়েন্ট অব সেল মেশিন পৌঁছাতে একটু দেরি হচ্ছে। খুব শিগগিরই মেশিনটি পৌঁছানো হবে। তখন  গ্রাহক সেবাটি নিতে  পারবেন। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।
 
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকের সব সেবার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারির বিকল্প নেই। মার্চেন্টের কাছে মেশিন না দিয়ে গ্রাহককে কার্ড দেওয়া ঠিক হয়নি ডাচ বাংলা ব্যাংকের। তাদের এটিএম বুথেও অনেক সময় টাকা থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে গ্রাহক ধরে রাখা যাবে না।
 
গত ২মাস ধরে ডিজিটাল নেক্সাস কার্ড দেওয়া হলেও কোনো সুপারশপ বা অন্য দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করতে না পারায় ক্ষোভ বাড়ছে গ্রাহকদের মধ্যে।
 
পরিবহন ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, নতুন কৌশলে প্রতারণা করছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। গ্রাহকের টাকা আটকে রেখে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।  
বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও সহকারী মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, কোনো গ্রাহক অভিযোগ করলে ডাচ বাংলা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।