ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হরতাল-অবরোধের প্রভাব- শেষ পর্ব

খুলনার জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৫
খুলনার জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা হরতাল-অবরোধের যাঁতাকলে দেশের অন্য জেলার মতো পিষ্ট হচ্ছেন খুলনার ব্যবসায়ীরাও। বিশেষ করে জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মহা বিপাকে।

নিরাপত্তার অভাবে বন্ধ রাখতে হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শত শঙ্কা উপেক্ষা করে কেউ কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখলেও মিলছে না আশানুরূপ ক্রেতা।

গত ০৫ জানুয়ারির পর থেকে টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির ফলে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে মাথায় হাত উঠতে বসেছে ব্যবসায়ীদের।

শিল্পনগরী খুলনার জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, টানা অবরোধে নামমাত্র অলঙ্কারও বিক্রি না হওয়ায় প্রতিদিনের দোকান খরচও উঠছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্বল্প পুঁজির মালিকদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

তারা বলেন, একে তো রয়েছে দোকান ভাড়া, তার ওপরে রয়েছে মহাজনের ঋণ। ব্যবসা না থাকায় অনেকেই সময় মতো কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতনের টাকার যোগাড় করতে না পেরে অনেকেই বেছে নিয়েছে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথ।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপ হয় ঐশী জুয়েলার্সের মালিক বাসুদেবের। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে দোকান খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে লাভ তো দূরের কথা, মাস শেষে কর্মচারীদের বেতন দেওয়াই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ওপর চড়া সুদে ঋণের বোঝাতো রয়েছেই। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।

নিউ রবিন জুয়েলার্সের মালিক রাম চন্দ্র পোদ্দার বলেন, হরতাল-অবরোধে নিরাপত্তাহীনতার কারণে অলঙ্কার প্রদর্শন করতে পারছি না। শীত মৌসুম বিয়ের মৌসুম। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আগের তুলনায় বিয়ের আয়োজনও সীমিত হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের উপর। বিয়ে কমে যাওয়ায় গয়না তৈরির অর্ডার না থাকায় কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।

তিনি জানান, ক্রমাগত লোকসানে হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। বিনিয়োগ থেকে সরে যাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন শত শত স্বর্ণকার।

খুলনা জেলা জুয়েলার্স মালিক সমিতির সভাপতি নিমাই চন্দ ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সমিতিতে ৬শ’র বেশি ব্যবসায়ী সদস্য রয়েছেন এবং এই পেশায় সংশ্লিষ্ট রয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। হরতাল-অবরোধে এসব ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার অভাবে দোকান খুলতে পরছেন না। কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল সব মিলিয়ে প্রতিদিনের যে খরচ তাও করতে হচ্ছে পুঁজি ভাঙিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।