ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ৬ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছে আইএমএফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ৬ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছে আইএমএফ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি)প্রবৃদ্ধি বাড়াতে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ছয়টি বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

বুধবার (০৪ মার্চ) শেরে বাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সাথে আইএমএফ’র উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের করা বৈঠকে তারা এ পরামর্শ দেন।



বৈঠকে তারা যে ছয়টি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো হলো, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাত, প্রয়োজনীয় জমির প্রাপ্যতা, আর্থিক খাতে ঝুঁকি মোকাবেলা ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করা।

সেই সঙ্গে বাংলাদেশ এমডিজি পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা দেশের স্থিতিশীল রাজনীতির উপর নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

আইএমএফ’র এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগারীয় অঞ্চলের ডেপুটি ডিভিশন চিফ রড্রিগো কিউবিরো’র নেতৃত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএমএফ’র বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেলা কাইন্দ্রিরাসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

আইএমএফ’র অগ্রাধিকার দেওয়া ছয়টি বিষয় সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ বছরই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ  চার লেন সড়কের কাজ সম্পন্ন হবে। পদ্মা সেতুর কাজ এখন দৃশ্যমান। রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। পায়রা ও মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপিত হলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেড় থেকে দুই ভাগ বেড়ে যাবে।

ভূমির প্রাপ্যতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত সরকারি জমি অলস পড়ে আছে তা বিনিয়োগে ব্যবহার করবে সরকার। দেশের উত্তরাঞ্চলে অনেক জমি রয়েছে, যা কোনো কাজে লাগানো হয়নি। এ জমিগুলোকে বিনিয়োগের আওতায় আনবে সরকার। এছাড়াও সরকার নদীগুলোতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করে নদীর দুই পাড় উঁচু করা হবে। এই দুই পাড়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে নদীর পানি প্রবাহকেও বাধামুক্ত রাখা হবে।

আগামী পাঁচ বছরে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করবে। সরকার বিশ্বাস করে, এতে করে দেশব্যাপী যেমন সুষম উন্নয়ন হবে, তেমনি দেশের অর্থনীতি ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক না হয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে, বলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

আভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। এর সুফল আগামীতে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হবে।

আইএমএফ প্রতিনিধিদের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিষয়ে জানাতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে গত ছয় মাসের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার চলে এসেছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমি তা প্রকাশ না করলেও, এতটুকু বলবো, এই অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে জিডিপি’র যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে তা গত বছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় অনেক ভালো। আমি এই অর্থ বছর শেষে জিডিপি’র হার সবাইকে জানাবো।

সবশেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী বাংলাদেশকে আগামীতে বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র উল্লেখ করে বলেন, সম্প্রতি জাপান এক্সপোর্ট ট্রেডিং রিসার্চ অরগানাইজেশন  (জেটরো) বলেছে, চীন ও থাইল্যান্ডে জাপানের বারো হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এইসব প্রতিষ্ঠানকে যদি অন্য দেশে স্থানান্তর করা হয়, তবে প্রতিষ্ঠান মালিকদের ৭২ ভাগ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের ৭১ ভাগ এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বেছে নেয়ার কথা বলেছেন।

সভায় পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আজম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. সামছুল আলমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।