ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনা বিকিকিনি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫
সোনা বিকিকিনি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ড. আতিউর রহমান / ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক সোনা বিকিকিনি সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।  
 
রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান।


 
গভর্নর বলেন, সোনার বাজার পড়তির দিকে থাকায় এবং বারবার ওঠানামা  করায় বাংলাদেশ ব্যাংক সোনা কেনা-বেচা সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে।
 
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দকৃত সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়াচ্ছে বলেও জানান তিনি।
 
এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, বিমানবন্দরে চোরাচালানের সোনা জব্দ করা হয় পুরোপুরি সরকারি বাহিনীর সাহায্যে। পরে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়ে রিজার্ভ বাড়ায়।
 
অপর এক প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী মন্তব্য কর আতিউর রহমান বলেন, স্থিতিশীলতা অর্জনই অর্থনীতির মূল লক্ষ্য। সেদিক থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্থিতিশীল।
 
ডলারের বিপরীতে টাকার মান শক্তিশালী হওয়ায় আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশই লাভবান হচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত ও চীনে আমরা যত রপ্তানি করি তার চেয়ে অনেক বেশি আমদানি করতে হয়। টাকার মান শক্তিশালী হওয়ায় দেশের আমদানিকারকরা কম টাকায় অধিক ডলার ক্রয় করতে পারছেন। সুতরাং লাভবান হচ্ছেন তারাই।
 
তবে বিপরীতভাবে রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান খুব বেশি বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া ভালো না। যতটা স্থিতিশীল রাখা যায় সার্বিক অর্থনীতির জন্য ততটাই মঙ্গল।

মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের মধ্যে রাখার চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের মধ্যে রাখা। কারণ এটাই আদর্শ। এর বেশি বা কম হলে সেটা অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়।
 
অন্যদিকে আমাদের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭-৮ শতাংশ। কিন্তু মূ্ল্যস্ফীতি যদি ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে তাহলে প্রবৃদ্ধিতে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশও নষ্ট হবে।
 
উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের মূল্যস্ফীতি যেমন ১-২ শতাংশ, প্রবৃদ্ধিও তেমন ১-২ শতাংশ। কিন্ত আমাদের তো সে সুযোগ নেই। কারণ আমাদের অর্থনীতিকে বড় করতে হবে।
 
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য কমলেও স্থানীয় পর্যায়ে দাম না কমার কারণ জানতে চেয়ে অপর এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, জ্বালানি তেলের স্থানীয় দাম নির্ধারণেও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হয়। এ কারণেই দাম কমছে না।
 
চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজারে ধসের মধ্যেও বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার কারণ ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার ফলেই শেয়ার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
 
খুব দ্রুত সময়ে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে গভর্নর বলেন, এ লক্ষে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক হাত ধরাধরি করে কাজ করছে।   সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে যাচ্ছে।
 
‘স্টেট অব দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মনিটরি পলিসি স্টেটমেন্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে হেকেপ’র একটি উপ-প্রকল্প।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইতুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. পাকাশা পাল। আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ এস শাহ।
 
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনীতি নিয়ে বাণিজ্য অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।