ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশে দুধের উৎপাদন চাহিদার অর্ধেকেরও কম

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫
দেশে দুধের উৎপাদন চাহিদার অর্ধেকেরও কম

ঢাকা:  দেশে দুধের মোট চাহিদার অর্ধেকও উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।   প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ১৪৪ দশমিক ৮১ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে দুধ উৎপাদন হচ্ছে ৬৯ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন।


 
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় বাংলানিউজকে জানান, খামারিরা অব্যাহতভাবে লোকসানে থাকায় দুধ উৎপাদনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলেই এই ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

অজয় রায় বলেন, একটি দুধেল গাভীর পেছনে যতটা খরচ হয় দুধ বিক্রি থেকে তা তুলতে পারেন না খামারিরা। দুধের দর লিটার প্রতি অন্তত ৫০ টাকা  হওয়া উচিত। ৫০ টাকার নিচে কখনও দুধ বিক্রি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। সেটা যে অঞ্চলেই হোক।

দুধের উৎপাদন বাড়াতে সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জানিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, খামারির সংখ্যা বাড়াতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণের ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিটি গাভী যেন দুধ দেয় সেটা নিশ্চিত করতে গাভী পালনে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গাভীর বাচ্চা মৃত্যুর হার রোধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
খামারিদের বাঁচাতে পারলে এই শিল্প বিকশিত হবে বলে মনে করেন অজয় কুমার রায়।
 
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদিত হয়েছিল প্রায় ২৩ লাখ ৬০ হাজার টন, ২০১০-১১ অর্থবছরে তা ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টন। গত তিন বছরে তা আরও ২৫ লাখ টন বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন।
 
দেশে তরল দুধের চাহিদা প্রায় পুরোটাই মেটায় দেশীয় খামারি ও দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানিগুলো। চাহিদার আলোকে এ খাতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় ৪৭ হাজার ৭১০টি ডেইরি খামার। এরমধ্যে আটটি বড় কোম্পানি। প্রাণ ও মিল্কভিটা আবার গুঁড়াদুধ তৈরির শিল্পও গড়ে তুলেছে। তরল দুধের সিংহভাগই আসে পাবনা, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা অঞ্চল থেকে।
 
বর্তমানে দুগ্ধ উৎপাদনের তুলনায় বিপুল ঘাটতি মেটাতে গুঁড়াদুধ আমদানিতে প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। অথচ সরকার এ খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা দিলে একদিকে দুধের উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে আমদানি বন্ধ হলে বিপুল পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় দুধ অত্যাবশকীয় উপাদান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের প্রতিদিন ২৫০ মিলি লিটার দুধ পান করা উচিত।   প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে প্রতিদিন ১২২ মিলি লিটার দুধ পান করা যথেষ্ট।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।