ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আয়কর মেলা-২০১৫

বেড়েছে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল

রহমত উল্যা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
বেড়েছে স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল বেড়েছে। এক সময় আইনজীবী বা কর কর্মকর্তাদের সহায়তা বেশি প্রয়োজন হলেও তা বর্তমানে কমে এসেছে।


 
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাব মাঠে আয়োজিত আয়কর মেলা ঘুরে দেখা যায়, আয়কর রিটার্ন জমা দিতে আসা বেশিরভাগ করদাতা নিজেই রিটার্ন পূরণ করছেন ও জমা দিচ্ছেন।
 
এ ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরে আয়কর মেলায় রিটার্ন বিষয়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা, রিটার্ন পূরণে বিভিন্ন কর অঞ্চলের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন করদাতারা।
 
মাসুদা বেগম নামে এক স্কুল শিক্ষিকা বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় গত দু’বছর রিটার্ন পূরণে মেলার হেল্পডেস্ক কর্মকর্তারা খুবই সহযোগিতা করেছে। এছাড়া রোভার স্কাউটও সহযোগিতা করে। এরপরও কিছুটা জটিলতা থেকে যায়।

সারাবছর স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন পূরণ বিষয়ে প্রচারণা চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।
 
মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, আয়কর রিটার্ন দাখিলে দলিলপত্র নিয়ে অনেককেই বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। আয়কর মেলার আগে অথবা সারাবছর এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিটার্ন পূরণের নিয়ম প্রচার করার দাবি জানান তিনি।

আয়কর মেলায় আগত সিরাজুল ইসলাম রিটার্ন দাখিল বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, রিটার্ন পূরণে কোনো ভুল হলে কম সময় পাওয়া যায় তা যাচাই করতে। মেলায় যেভাবে দেওয়া হয় সেভাবে জমা নেয়। পরে রিটার্ন যাচাই করে কোনো ভুল হলে কর অঞ্চল থেকে কিছুটা হয়রানি করা হয়।
 
পুরান ঢাকা থেকে আয়কর মেলায় আগত বিলকিছ আরা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর রিটার্ন জমা দেওয়ার আগে ফটোকপি করে রেখে দেই। তা দেখে পূরণ করি। প্রতিবছর সামান্য পরিবর্তন হয়। সেক্ষেত্রে মেলায় কর কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চাইলে তারা সহযোগিতা করে।
 
রিটার্ন জমা দিতে আসা পান্থপথের সফট সল্যুয়েশনের মালিক আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মেলায় এসে কেন রিটার্ন দাখিল করব। অনলাইনের যুগে রিটার্ন অনলাইনে জমার সুযোগ করে দিলে কিছুটা হলেও ভোগান্তি কমতো। এনবিআর এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।
 
মেলায় কর অঞ্চল-৪ এর সহকারী কর কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নির্দেশনা হলো যেভাবে জমা দেবে সেভাবে নেওয়া। এত বেশি রিটার্ন জমা নিতে হয় যে, সবকিছু যাচাই করার সময় থাকে না। তবে কোনো করদাতা রিটার্নের কোনো অংশ না বুঝলে আমরা বুঝিয়ে দেই।
 
মেলায় কর অঞ্চল-২ এর সহকারী কমিশনার সিরাজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, গত দু’বছরের চেয়ে এবার স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে জমা বেড়েছে। আগে ভুল হবে বিধায় অনেক করদাতা টাকা দিয়ে আইনজীবীর সহায়তা নিতেন। মেলার সহযোগিতা ও করদাতারা সচেতন হওয়ার ফলে স্বনির্ধারণী বেড়েছে।
 
মেলা ঘুরে দেখা যায়, আয়কর মেলায় রিটার্ন পূরণে সহযোগিতার জন্য ৫৬টি হেল্পডেস্ক রাখা হয়েছে। এছাড়া সব কর অঞ্চল কর্মকর্তারা সহযোগিতা করছেন। কর কর্মকর্তা ও মেলায় দেওয়া রিটার্ন পূরণে নির্দেশিকা অনুসরণ করে বেশিরভাগ করদাতা রিটার্ন পূরণ করে জমা দিচ্ছেন।
 
কর অঞ্চল-১১ এর অতিরিক্ত কমিশনার কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, কর ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করতে ই-ফাইলিং সিস্টেম প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে করদাতারা ঘরে বসেই রিটার্ন পূরণ ও দাখিল করতে পারবেন। ভিয়েতনামের একটি কোম্পানি কাজ করছে।
 
চলতি বছরের শেষ দিকে করদাতারা এর সুফল পাবেন। তবে মেলায় রিটার্ন পূরণ ও জমার ক্ষেত্রে করদাতাদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে- যোগ করেন তিনি।
 
মেলা সচিবালয় সূত্র জানায়, মেলার প্রথমদিন বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে ১৪ হাজার ৯৯৮ জন রিটার্ন দাখিল করেছেন। গতবছর একই দিন দাখিল করেছে ১৩ হাজার ৪৫১ জন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
আরইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।