ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঈদের আমেজে ব্যাংকপাড়া প্রায় স্থবির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
ঈদের আমেজে ব্যাংকপাড়া প্রায় স্থবির ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঈদ-উল আজহার তিনদিনের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সরকারি-বেসরকারি কর্মস্থল খুললেও রাজধানীতে ছুটির আমেজ কাটেনি। রাস্তা, গণপরিবহনের মতো ফাঁকা মহানগরী ঢাকার কর্মস্থলগুলো।

কাজের তাড়া না থাকায় কর্মস্থলে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর খোশগল্প করেই সময় পার করছেন।
 
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ব্যাংকপাড়া হিসেবে পরিচিত রাজধানীর মতিঝিলে বিভিন্ন ব্যাংক-বিমার কার্যালয়ে গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে।  
 
এবারের ঈদে তিনদিনের সরকারি ছুটির দুই দিনই সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে পড়েছে। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সে ছুটি শেষ হলেও চিরচেনারূপে ফেরেনি ব্যস্ততম এই মহানগরী। তিনদিনের ছুটি কাটিয়ে অনেকেই কর্মস্থলে যোগ দিলেও কর্মচঞ্চলতা ফেরেনি এখনও। তবে বাড়তি ছুটি নিয়ে যারা বাড়ি গিয়েছিলেন, তারা এখনও ফেরেননি।
 
যানজটের ঢাকাও এখন ফাঁকা। গণপরিবহন এবং মানুষের কোলাহল একেবারেই কম। হকার না থাকায় ফুটপাতগুলোও সুনসান, নীরব। অনেকে মনে করছেন, পুরোপুরি কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পেতে অন্তত চলতি সপ্তাহটা অপেক্ষায় থাকতে হবে ঢাকাকে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক, বিমা অফিস, ব্রোকারেজ হাউজ, এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই কার্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে উপস্থিতি সামান্য। ঈদের ছুটি এবং অবকাশকালীন ছুটি মিলিয়ে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণও যথারীতি ফাঁকাই।
 
রাজধানীর অফিস-আদালত,  রাস্তাঘাটের মতো নগরীর বড় বড় শপিং মলগুলোও বন্ধ প্রায়। রেস্টুরেন্টগুলো তো বন্ধই, অলি-গলির ছোট ছোট দোকানপাটগুলোও পুরোপুরি খোলেনি।

মতিঝিলে বিভিন্ন ব্যাংক, বিমার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঈদ হওয়ায় এবার তিন দিন সরকারি ছুটির দুই দিনই সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে পড়েছে। ফলে অনেকেই তিন-চার দিন বাড়তি ছুটি নিয়ে গ্রামে গেছেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে। ছুটির আবেদনও এবার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

ঈদ-উল আজহার আনন্দ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে উপভোগ করতে ঢাকা ছেড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ফলে কয়েক দিন ধরে যানজটের দৃশ্য নেই রাজধানীতে। যারা ঢাকায় ঈদ করেছেন যানজটে তাদের নাকাল হতে হয়নি। তাছাড়া নগরজুড়ে নেমে এসেছিল নীরব পরিবেশ।

ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে ব্যাংক-বিমার প্রধান কার্যালয়গুলো এরকমই ফাঁকাই ছিল। সকাল দশটার পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক, বিমা অফিস, ব্রোকারেজ হাউজ, এফবিসিসিআই কার্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও অর্ধেকের বেশি চেয়ার দেখা যায় খালি।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক মহাব্যবস্থাপক বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে কিছু কর্মকর্তা ছুটিতে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে ব্যাংকগুলোর লেনদেন বা ক্লিয়ারিং হাউজসহ অন্যান্য যে সেবা বাংলাদেশ ব্যাংক দেয়, তা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় জনবল উপস্থিত আছেন।
 
সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার সিরাজুল ইসলাম ফকির জানান, ব্যাংকের অধিকাংশ কর্মকর্তাই সকালে অফিসে এসেছেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর গল্প-আড্ডাতেই সময় কাটছে। কাজের চাপ নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা এসে শুভেচ্ছা বিনিময় করে গেছেন।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার আবু নাসের ফয়সল বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে আমাদের উপস্থিতি প্রায় ৫০ শতাংশ। ছুটির পর পর বলে ব্যাংকে লেনদেন কম। টাকা ওঠানো বা জমা দেওয়াও হচ্ছে কম।
 
তবে উপস্থিতি কম হলেও সেবা প্রদানে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না বলে তিনি দাবি করেন।
 
ডিসিসিআই’র এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকার বাইরে যারা ঈদ করতে গেছেন তারা না ফিরলেও অন্যরা প্রায় সবাই এসেছেন। তার দাবি, প্রায় ৭০ শতাংশ কর্মী প্রথম কর্মদিবসে অফিস করছেন।
 
২৩ সেপ্টেম্বর থেকে রোববার পর্যন্ত ঈদের ছুটি থাকায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে সব ক’টি ব্রোকারেজ হাউজ। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হওয়ার কথা।
 
এদিকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলানিউজকে জানান, বরাবরই কোরবানির ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসার পর সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়তে হয় দুপুরের খাবার নিয়ে। রেস্টুরেন্ট, ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় দুপুরে না খেয়েই তাদের কাজ করতে হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।