ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

টিপিপি’তে ৪ হাজার কোটি টাকার রফতানি কমার আশঙ্কা

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
টিপিপি’তে ৪ হাজার কোটি টাকার রফতানি কমার আশঙ্কা

ঢাকা: গত ৫ অক্টোবর বিশ্বের ১২টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে টিপিপি (ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ) চুক্তি। এর মধ্যে বাংলাদেশি পণ্যের বড় ক্রেতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামও রয়েছে।

এর ফলে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার পণ্যের কার্যাদেশ বাংলাদেশের হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির (ইএবি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি হয়। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই হলো গার্মেন্টস পণ্য। বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ সমূহের মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনাম। আর টিপিপিতে যেহেতু ভিয়েতনাম রয়েছে সেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে ভিয়েতনাম। ফলে একদিকে যেমন তাদের পণ্যের দাম কমে আসবে ঠিক তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্বের তুলনায় ভালো সম্পর্কের কারণে আগের তুলনায় বেশি অর্ডার পাবে ভিয়েতনাম।

এসব সম্ভাবনার কারণেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করছেন ভিয়েতনামে। ফলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি করে এরমধ্যে ১০ শতাংশ কার্যাদেশও যদি টিপিপিভুক্ত দেশে চলে যায় তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে ৪ হাজার কোটি টাকার রফতানির কার্যাদেশ হারাতে হবে।

বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির সভাপতি ও বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাংলানিউজকে বলেন, টিপিপিতে শুধু ভিয়েতনামই নয় আছে আরো ১১টি দেশ। এসব দেশে বাংলাদেশ প্রচুর পণ্য রফতানি করত। কিন্তু টিপিপিতে ভিয়েতনাম থাকায় মূল্য সক্ষমতায় অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশকে। সে ক্ষেত্রে কিছু কার্যাদেশ কমে গেলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়তা আমাদের অত্যন্ত জরুরি।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার কোনো প্রভাব না পড়া অবাক করার মতো বিষয়ে বলে জানিয়েছেন ইএবি সভাপতি।
অন্যদিকে পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টিপিপির কারণে পোশাক শিল্পে কতটা প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে এখনও তেমন কিছু ধারণা করা যাচ্ছে না। কারণ সামনের দিনগুলো সম্ভাব্য অর্ডার ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতের অর্ডার ব্যবসায়ীদের নিজেদের তৈরি করে নিতে হবে।  

প্রসঙ্গত, টিপিপি মূলত আন্তঃপ্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তির (টিপিএসইপি) বর্ধিত রূপ। ২০০৫ সালে নিজেদের মধ্যে আর্থিকসহ নানা ধরনের উন্নয়নমূল কাজ সম্পন্ন করতে ব্রুনেই, চিলি, সিঙ্গাপুর ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মেক্সিকো, পেরু, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, জাপান ও ভিয়েতনাম এমনই একটি নতুন চুক্তি সম্পাদনের জন্য টিপিএসইপি-এর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে।

সাত বছর আলোচনা শেষে চলতি বছরের ০৫ অক্টোবর ১২টি দেশের মধ্যে টিপিপি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে চুক্তিভুক্ত দেশসমূহ তাদের অভ্যন্তরে শুল্কমুক্তভাবে পণ্য সরবরাহ করার সুযোগ পাবে। এছাড়া চুক্তিভুক্ত দেশসমূহের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তারা একসঙ্গে কাজ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
ইউএম/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।