ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৫ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৫ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক ছবি: পিয়াস / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এ বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ হবে বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। পরবর্তী বছর এ প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ হবে বলেও মনে করেন তিনি।


 
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি, বাংলাদেশ অ্যান্ড রিজিওনাল কো-অপারেশন: প্রবলেম অ্যান্ড প্রসপেক্ট’ শীর্ষক গণবক্তব্য অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
 
কৌশিক বসু বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতি রূপান্তর পর্যায় পার করছে। বিশেষ করে গত ৫ থেকে ৭ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনীতির এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকলে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ এশিয়ার টাইগার হিসেবে পরিচিত হবে।
 
তিনি বলেন, উন্নত অর্থনীতির দেশে পৌঁছাতে চীন, সিঙ্গাপুর ও ভারতকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বাংলাদেশকেও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অবকাঠামোর উন্নয়ন।

সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশ অবকাঠামো খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রধান অর্থনীতিবিদ।
 
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অনেক উন্নয়ন করেছে। এখন বাংলাদেশকে শিক্ষা ও দক্ষতার দিকে নজর দিতে হবে। ব্যবসার দিকেও আরও নজর দিতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ করতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
 
গণবক্তব্যের শুরুর দিকে কৌশিক বলেন, আমি ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে এসেছিলাম। এ ২০১৫ সালে এখন আবার এলাম। বাংলাদেশের অর্থনীতি অসাধারণ উন্নতি করেছে। ১৯৯২ সালের তুলনায় মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে। একই সঙ্গে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), শিশু মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, জাতীয় আয়ে শিল্পের অবদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ উন্নতি করেছে।
 
তিনি বলেন, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে এফডিআই ছিল মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। যা প্রায় শূন্য শতাংশ। বর্তমানে তা প্রায় ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় আয়ে শিল্পখাতের অবদান বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ।
 
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০৮ সালের দিকে ছিল ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার। এখন এটি ২৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। এ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে সাতমাসের বেশি আমদানি ব্যায় মেটানো সম্ভব।

‘বাংলাদেশের এ উন্নয়ন অসাধারণ’- বলেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু।
 
তিনি  আরও বলেন, চীনের বর্তমান রিজার্ভ ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। ৫ থেকে ১০ বছর আগে চীনের এ ধরনের উন্নয়ন কল্পনা করা যেতো না। চীনের উন্নয়নে উৎপাদন খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশেরও উৎপাদন খাতের দিকে নজর দেওয়া উচিত।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পালের সঞ্চালনায় গণবক্তব্যে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
 
সভাপতির বক্তব্যে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিকভাবে এশিয়ার টাইগার হওয়া সম্ভব। এজন্য সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। আমরা অবকাঠামোর উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগেরও আহ্বান করছি।
 
তিনি বলেন, আমরা একই সঙ্গে কৃষি, সেবা ও উৎপাদন- এ তিনটি খাতেই উন্নয়ন করছি। যা ভারতের মতো দেশও পারছে না। আমরা অবকাঠামোর উন্নয়ন, শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি সঠিকভাবে করতে পারলে ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে চলে যেতে পারবো।
 
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে রিভার্ভ রয়েছে তা অর্থনীতির খারাপ সময়ে ব্যবহারের জন্য। তারপরও প্রয়োজন হলে সুসময়েও আমরা রিজার্ভের অর্থ কাজে লাগাবো। এ রিজার্ভ অর্থনীতির মূল ভিত্তি। আমাদের রিজার্ভই অর্থনীতির শক্তি। এ শক্তির ওপর ভর করেই আমরা নিজস্ব অর্থে, নিজস্বভাবে পদ্মাসেতু করতে পারছি।
 
** বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধির

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫, আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা
এএসএস/এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।