ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইসলামপুরে বিদেশি থ্রি পিসের চাহিদা বেশি

তাবারুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৬
ইসলামপুরে বিদেশি থ্রি পিসের চাহিদা বেশি

ঢাকা: আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বাজারে দেশি থ্রি পিসের চেয়ে বিদেশি থ্রি পিসের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন দেশের কাপড়ের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার ইসলামপুরের ব্যবসায়ীরা।

দেশি কাপড়ের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাকিস্তান, ভারত ও চীন থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে বাংলাদেশের বাজারে প্রতিনিয়ত থ্রি পিসসহ বিভিন্ন জামা-কাপড় প্রবেশ করছে।

এতে একদিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে দেশি কাপড়ের ব্যবসায়ীরা পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করতে পারছেন না। এই জন্য দেশি কাপড়ের ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়তে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী।

সম্প্রতি রাজধানীর ইসলামপুরের বিভিন্ন পাইকারি মার্কেটে ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, মফস্বল থেকে যেসব ব্যবসায়ী থ্রি পিস নিতে এই বাজারে আসেন, তাদের অধিকাংশের চাহিদা রয়েছে বিদেশি কাপড়ের প্রতি। ক্রেতাদের বড় অংশ ঈদ উপলক্ষে ভারত, পাকিস্তান ও চীনের কাপড় চেয়ে থাকেন। যে কারণে দেশি কাপড় বিক্রি কম হচ্ছে।

ইসলামপুরে থ্রি পিসের সবচেয়ে বড় পাইকারি মার্কেট হলো ‘ইসলামপুর প্লাজা’। এতে প্রায় ২৫০টি থ্রি পিসের দোকান রয়েছে। রোববার দুপুরে এই মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জড়ো হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার দেশি থ্রি পিসের চাহিদা অনেক কমে গেছে। জেলা ও উপজেলা শহর থেকে যেসব খুচরা ব্যবসায়ী আসেন, তারা বিদেশি থ্রি পিস খোঁজেন।

আর এর জন্য অবৈধপথে বিদেশি কাপড়ের দেশে অবাধ প্রবেশকে দায়ী করে ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশে অবৈধভাবে কাপড় আসা প্রতিরোধ করতে হবে। দেশীয় বস্ত্র শিল্পকে বাঁচাতে হলে অবৈধপথে কাপড় আসা বন্ধ করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

ইসলামপুরের নাম করা একটি পাইকারি কাপড়ের মার্কেট হলো ‘লায়ন টাওয়ার’। এই মার্কেটের ‘সনেট সিটি’ নামে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রিপন পাল বাংলানিউজকে বলেন, এবার ব্যবসায় অনেকটা মন্দাভাব চলছে। বিদেশি কাপড়ের ভিড়ে দেশি কাপড় মনে হয় হারিয়ে যাচ্ছে!

এ বছর যারা পাকিস্তান, ভারত ও চীনের কাপড় বিক্রি করছেন তারা বেশ ভালো ব্যবসা করতে পারছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দেশি কাপড়ের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত দেওয়ার মতো অবস্থা চলছে।

ইকরামদ্দিন প্লাজার ‘আশা মেচিং কর্নার’ এর ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের দোকানে বিদেশি আইটেমই বেশি। এখানে পাকিস্তান, ভারত ও চীনের থ্রি পিসসহ বিভিন্ন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কাপড় রয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান, ভারত ও চীনের লোন থ্রি পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দোকানে পাইকারি সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২০০ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ৬০০ টাকার মধ্যে বিদেশি থ্রি পিস পাওয়া যায়।

ইসলামপুরের ১০৫ নাম্বার রোডের ‘গ্রামীণ প্রিন্ট’ নামে একটি পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সেন্টু চৌধুরী জানান, অন্যান্য বছর রোজার মাঝামাঝিতে বিক্রি বেশ ভাল দেখা গেলেও এবার এর উল্টো। মফস্বল থেকে যেসব খুচরা বিক্রেতা রোজার আগে আগে কাপড়-চোপড় নিয়ে গেছেন তারা এর মধ্যে আর আসেননি। তারাও তাদের দোকানের ওইসব মালামাল বিক্রি করে শেষ করতে পারেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৬
টিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।