ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘মেহেরচণ্ডি মুখী’ কচুর আশানুরূপ ফলনে খুশি কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৬
‘মেহেরচণ্ডি মুখী’ কচুর আশানুরূপ ফলনে খুশি কৃষক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেহেরপুর: চলতি বছর মেহেরপুরের ‘মেহেরচণ্ডি মুখী’ কচুর ফলন ও দাম দুটোই ভালো হয়েছে। তাই কচু চাষিদের মুখে আনন্দের হাসি।

উৎপাদিত কচু জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে প্রতিদিন।

কৃষি অফিস জানায়, এবার মেহেরপুরে আউশ ও দেশি জাতের ২ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে কচুর আবাদ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৭০০ হেক্টর জমিতে। যা গতবছরের তুলনায় ৩৩০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে।

সদর উপজেলার দীঘিরপাড়া এলাকার কচু চাষি হেকমত বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমি ৬ বিঘা জমিতে মেহেরচণ্ডি মুখী কচু চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কচু চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কচুর ফলন ভালো হয়েছে।

দীঘিরপাড়া  গ্রামের সেলিম রেজার ৪ বিঘা, হ্যাবল মিয়ার ৫ বিঘা, নুরজামানের ৯ বিঘা ও মদন আলীর সাড়ে তিন বিঘা, মামুন হোসেন ৫ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছিলেন বলে বাংলানিউজকে জানালেন।

তারা জানান, জমি থেকে আউশ জাতের মেহেরচণ্ডি মুখী কচু’র উত্তোলন চলছে। প্রায় ১০/১২ দিন আগে থেকেই উত্তোলন শুরু হয়েছে। এলাকার ফঁড়িয়ারা বাড়ি থেকে এক হাজার টাকা মণ দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি কচু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছে।

কচু চাষি কেসমত আলী জানান, এবছর কচু আবাদে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। যে কারণে কচু চাষিরা খুশি। আউশ জাতের কচু তোলা শুরু হয়েছে ১৫ দিন আগে। জুলাইয়ের প্রথম থেকে দেশি কচু তোলা শুরু হয়েছে। কচু তোলার কাজে নিয়েজিত এলাকার নারী ও পুরুষ শ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শ্রমিকদের সর্দার শহিদুল ইসলাম তানু বাংলানিউজকে বলেন, কচু উত্তোলন শুরু হওয়ার পর থেকে শ্রমিকরা আর কাজের অভাবে বসে নেই। কচু চাষিদের কাছ থেকে বিঘা প্রতি ৬ হাজার টাকা চুক্তি করে জমি থেকে কচু তোলার কাজ করি। এতে আমাদের প্রায় প্রতিদিনই সাড়ে তিন শ থেকে ৪শ’ টাকা আয় হয়।

কচু উত্তোলনকারী শ্রমিক মাবিয়া খাতুন, কোহিনুর বানু, মমতাজ খাতুন, ফরিদা ইয়াসমিন, লাল্টু মিয়া ও আমাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, জমি থেকে কচু তোলার টাকা দিয়েই এবার ঈদ করছি আমরা। নতুন কাপড় কিনেছি।

কচু’র ফঁড়িয়া ব্যবসায়ী সদর উপজেলার কান্দেবপুর গ্রামের বাবু মিয়া, শাহিন আলম, আক্কাছ আলী ষোলমারী গ্রামের খোকন মিয়া ও কালাচাঁদপুরের মিয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মেহেরপুরের ‘মেহেরচণ্ডি মুখী’ কচুর চাহিদা দেশ জুড়ে। ঢাকা, খুলনা ও সিলেটের বাজারে মেহেরপুরের সু-স্বাদু এই কচু’র বাজার রয়েছে।

এসব বাজারে কচুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আমরা মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে চাষিদের কাছ থেকে কচু কিনে এসব বাজারে বিকি করে থাকি।

তারা আরও বলেন, এখানকার চাষিদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা মণ দরে কচু কিনে এসব বাজারে বিক্রি করে আমাদেরও ভালো লাভ হয়।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কচুর ফলন যেমন ভালো হয়েছে। তেমনি কৃষকরা কচু’র বাজার দরও ভালো পাচ্ছেন। তাই মেহেরপুর জেলার কৃষকরা অন্য আবাদের পাশাপাশি সু স্বাদু এ সবজি চাষের প্রতি দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৬
পিসি/

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।