কর্মসূচির আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রায় ৫০ লাখ হতদরিদ্রের তালিকা এখন থেকে খাদ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সোমবার (০৬ মার্চ) খাদ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে এ তালিকা প্রকাশ করেন।
তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে এ উদ্যোগ জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, আপলোড করা তালিকায় কোনো স্বচ্ছল ব্যক্তির নাম থাকলে তা সহজেই যাচাই করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে মোবাইল, এসএমএস, ই-মেইল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করা যাবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ঢাকায় ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৮৫১ জন, চট্টগ্রামে ৬ লাখ ৯ হাজার ৪৭৬ জন, সিলেটে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৬ জন, রাজশাহীতে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ২৭ জন, রংপুরে ৮ লাখ ৮২ হাজার ১০১ জন, খুলনায় ৬ লাখ ১৯ হাজার ৫৪১ জন ও বরিশালে ৪ লাখ ৮০ হাজার ২৭৮ জনসহ মোট ৫০ লাখের মধ্যে ৪৯ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৭ জনের নাম যুক্ত রয়েছে।
তালিকায় হতদরিদ্রের পরিবর্তে স্বচ্ছল ব্যক্তির নাম থাকলে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে বলে জানান কামরুল ইসলাম।
‘আমরা তালিকাটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ রাখতে চাই, ত্রুটিযুক্ত তালিকা রাখতে চাই না। ’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতায় বিশ্বাস করি বলেই অগ্রসরমান শক্তির মাধ্যমে দেশ এগিয়ে চলছে। এ কর্মসূচিতেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
২০০৬ সালে প্রণীত জাতীয় খাদ্য নীতিতে সব সময় দেশের সব মানুষের জন্য নির্ভরযোগ্য খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে বছরের ৫ মাস (সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল) প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে প্রতিকেজি ১০ টাকা দরে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বরে মোট ৩ লাখ ৮৯ হাজার মেট্রিক টন চাল বিতরণ হয়েছে এবং চলতি মার্চ ও এপ্রিলে বিতরণ শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই লাখ ১৮ হাজার ৮৬৫টি কার্ড ও ১৩০ জনের ডিলারশিপ বাতিল এবং ৩৭ জন ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে জানিয়ে কামরুল বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত ১০ লাখ ৪ হাজার ১৬৮ টাকা জরিমানা করেছেন।
এছাড়া খাদ্য বিভাগের ২ জন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ২ জন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কর্মসূচি আরও সুসংহত রাখতে রাজনৈতিক দলের হলেও কেউ ছাড় পাবে না জানিয়ে কামরুল বলেন, ডিলার এবং ইউপি চেয়ারম্যানরা বেশিরভাগই আমাদের লোক, তারাও ছাড় পায়নি।
কর্মসূচির জন্য নীতিমালা প্রণয়ণ করা হচ্ছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এতে ইউপি চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ইউপি খাদ্যবান্ধব কমিটি এবং জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে জেলা খাদ্যবান্ধব মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সাংবাদিকদের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ দ্বারা, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব কায়কোবাদ হোসেন, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৭/আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস