আইডিআরএ সূত্র জানায়, গত মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন ব্যবস্থাপনা ব্যয় বিধিমালা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত নন-লাইফ কোম্পানির অডিট কার্যক্রম স্থগিত ও নতুন করে অডিটর নিয়োগ বন্ধ করে আইডিআরএ। ফলে ২৪টি বিমা কোম্পানিতে অডিটরের কার্যক্রম স্থগিত এবং ২১টিতে নতুন করে অডিটর নিয়োগ দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
আইডিআরএ’র চিঠিতে বলা হয়, বিমা আইন অনুযায়ী বিশেষ নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হলে কোম্পানিগুলোর ওপর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভীষণভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। বিমা আইনের যথাযথ বাস্তবায়নও মুখ থুবরে পড়বে। জবাবদিহিতা না করার সংস্কৃতির উদ্ভব হতে পারে এতে Culture of impunity সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ নিরীক্ষা করতে প্রস্তুতির জন্য আরও সময় লাগলে তারা তা চাইতে পারে। কিন্তু বিশেষ নিরীক্ষা না করা বা স্থগিত করার দাবি আইনের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করার শামিল। যা বিমা শিল্প তথা বিমা গ্রহীতাদের স্বার্থে কাম্য হতে পারে না।
এমতাবস্থায়, লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মতোই নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারসহ উপকারভোগীদের বৃহত্তর স্বার্থে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে যৌক্তিকতা অনুধাবন পূর্বক বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত সংক্রান্ত সকল আদেশ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, নন-লাইফগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য ২০১৬ সালে ব্যবস্থাপনা ব্যয়সহ আনুষঙ্গিক তথ্যাদি Financial Indicators বিবরণীর মাধ্যমে সংগ্রহ করে আইডিআরএ।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ০৭ বছরে মোট ১৪৫১ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে কোম্পানিগুলো। যা প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদী অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই নন-লাইফগুলোর ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ চালু করা দরকার।
জীবন বিমা কোম্পানিগুলোতে অডিটর নিয়োগের পর সফলতাগুলো উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিমা শিল্পের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সর্বোপরি কোম্পানির পলিসিহোল্ডার তথা শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কোম্পানির পলিসিহোল্ডার, শেয়ারহোল্ডারদের যথাযথ স্বার্থ সংরক্ষণার্থে ও বিমা আইনের বিধান যথাযথ পরিপালনার্থে কর্তৃপক্ষ বিমা আইন মোতাবেক অনুমোদিত সীমার অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়।
অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ায় প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে জীবন বিমা করপোরেশনসহ ৬টি কোম্পানিতে বিমা আইন ২০১০ এর ২৯ ধারা মতে অডিটর নিয়োগ করা হয়।
নিরীক্ষা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের কারণ হিসেবে বিশেষ নিরীক্ষা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা গত ত্রুটিসহ নানাবিধ সমস্যা চিহ্নিত করে। ত্রুটিগুলো বিবেচনায় নিয়ে কোম্পানিগুলোর গৃহীত পদক্ষেপের ফলে ২০১৬ সাল শেষে জেবিসি ব্যতীত ১৭টি পুরনো বিমা কোম্পানির মোট ব্যবস্থাপনা ব্যয় দাড়াঁয় মোট ৮৪.৬৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৭
এমএফআই/এমজেএফ