এবিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে একটি আবেদন পেশ করেছেন সংগঠনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ।
এতে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের বিপর্যয়ের পর নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের আগেও একই রকম প্রস্তাব রেখেছিল বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।
প্রস্তাবের শীর্ষে অপ্রদর্শিত অর্থ-বিনিয়োগ প্রসঙ্গ
অপ্রর্দশিত অর্থ (আনডিসক্লোজড মানি) পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে অনেক টাকা করের আওতার বাইরে রয়েছে। অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা উৎপাদনশীল খাতে এ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন না। এর ফলে দেশের অনুৎপাদিত খাতের পাশাপাশি অবৈধ কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তাই রেগুলেটরি বডির কোনো রকম প্রশ্ন ছাড়াই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব জানানো হয়েছে।
মার্জিন লোনের প্রতিষ্ঠানের সুদ বাতিল
অনেক মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজ নেগেটিভ ইক্যুইটিতে থাকা তাদের অ্যাকাউন্টগুলোর সুদ মওকুফ করেছে। তারপরও এ অ্যাকাউন্টগুলো আন রিয়েলাইজেবল (অনাদায়যোগ্য সুদ) রয়েছে। কিন্তু আন রিয়েলাইজেবল ইন্টারেস্টের ওপর কর দিতে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে সরকারের বিশেষ প্রণোদনার অর্থ থেকে দেওয়া গ্রাহকের সুদ মওকুফের টাকার ওপর ‘ওয়েব ইনকাম ইন্টারেস্ট’ কর দিতে চাপ দিচ্ছে এনবিআর। এছাড়াও মার্জিন লোনের ক্ষেত্রে যে খরচকে রাইট আপ করা হয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে ১৫ শতাংশ কর সুবিধা দেওয়া
বর্তমানে বাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলো তালিকাভূক্ত নয় এমনসব কোম্পানির চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি কর-রেয়াত সুবিধা পায়। এ সুবিধা ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হলে ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত হওয়ার জন্য আগ্রহ পাবে। এতে সরকার আরো বেশি রাজস্ব পাবে।
মার্কেট মেকারদের সমান কর আরোপ
পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান (মার্কেট মেকার) ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। বর্তমানে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো ১৫ শতাংশ হারে কর সুবিধা নিচ্ছে। অথচ পুঁজিবাজারের জন্য একইভাবে অবদান রাখা ব্রোকারেজ হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ৩৭ শতাংশ হারে কর দিতে হচ্ছে। তাই সবার জন্য সমান অর্থাৎ ১৫ শতাংশ কর সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ও অ-তালিকাভূক্ত সব প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সমান। তাই বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে অ-তালিকাভূক্ত কোম্পানির চেয়ে ৪০ শতাংশ ভ্যাট সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ওপর যে ১০ শতাংশ ক্যাপিটাল গেইন টেক্স রয়েছে, তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এমনকি পাশের দেশ ভারতে পুঁজিবাজারের ধস ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর ফলে ধসের কয়েকদিনের মধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে ২০১০ সালে বড় ধরনের ধস হয়েছে কেবল ব্যাংলাদেশ ব্যাংকেরেইতিবাচক ভূমিকার অভাবে। ফলে এখনও অস্থিতিশীলই রয়ে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। এ সংকট থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে অভিমত জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়:২২১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এসই/জেএম