সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড গ্রামের ওই পলিসিহোল্ডারদের অভিযোগ, নিয়ম অনুসারে দশ বছর মেয়াদী ডিপিএস করার পর, পলিসির নির্ধারিত টাকার সঙ্গে আরও দেড় থেকে দিগুণ মুনাফা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় কোম্পানির তরফ থেকে।
এখন ডিপিএসের মেয়াদ গড়িয়ে আরও দুই বছর পেরিয়ে গেলেও লাভ তো দূরে থাক, ডিপিএসের আসল টাকা দিতেও গড়িমসি করছে গোল্ডেন লাইফ কর্তৃপক্ষ।
তাদের অভিযোগ, গোল্ডেন লাইফের হয়ে এই ডিপিএস করতে তাদের প্ররোচিত করেছিলেন স্থানীয় মাদরাসার কতিপয় হুজুর ও মসজিদের ইমাম। তাদের কথা ও কোম্পানির প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে আমরা মাসে সর্বনিম্ন ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা কিস্তি করে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস বিমা করি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্থানীয় একটি মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক আবু তাহের বাংলানিউজকে বলেন, আমি একজন মাদরাসার শিক্ষকক। এলকায় আমার একটা মর্যাদা ও সুনাম আছে। কারণ এলাকার সবাই হুজুরদের বিশ্বাস করেন। ডিপিএস করলে বিনাসুদে ১০ বছর পর কোম্পানি দেড়-দ্বিগুণ মুনাফা দেবে বলে আমাদের কাছে ওয়াদা করে। তাদের কথা বিশ্বাস করে এলাকার মানুষদের বিমা করিয়েছি। কিন্তু মেয়াদ পূরণ হওয়ার পর থেকেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডিপিএসের টাকা দিচ্ছে না গ্রাহকদের। দিচ্ছে না নির্বাহী রশিদও।
একশ’র বেশি গ্রাহক দুই বছর ধরে ডিপিএসের টাকার অপেক্ষায় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের কাছে হাতে পায়ে ধরেছি বিমার টাকা দিতে। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে আমাদের চেক কিংবা কোনো টাকা পয়সা দিচ্ছে না। ফলে একদিকে নিজের পলিসির টাকা অন্যদিকে এলাকার মানুষও আমার কাছে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এতে উভয় সংকটে আছি।
এদিকে জানা গেছে, বিমা কোম্পানিতে বলার পরও কোনো ধরনের অগ্রগতি না হওয়ায় গত ২০ মার্চ ৯৬ জন পলিসিহোল্ডার তাদের পলিসি নম্বর ও স্বাক্ষরসহ কোম্পানির বিরুদ্ধে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে অভিযোগ করে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘আমরা চট্টগ্রামের জনসাধারণ গোল্ডেন লাইফের প্রকল্প মুদারাবা ইসলামী সঞ্চয় বিমা ডিপিএসের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ২ বছরও আমাদের পাওনার চেকগুলো কোম্পানি দিচ্ছে না। এর দাবিকৃত টাকার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিমার টাকা পরিশোধ করছে না। তারা অপ-উদ্দেশে কালক্ষেপণ করছেন, যা প্রতারণার সামিল। তাই চেকগুলো পাওয়ার জন্য আপনার জরুরি হস্তপেক্ষপ কামনা করছি। ’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সীতাকুণ্ডের মধ্যম মাহমুদাবাদের (বাজার তলীর) গ্রাহক নাছিমা আক্তার (পলিসি নম্বর ০০০০২০০৯৮২-৮) বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মসজিদের ইমামের কথায় ৫০ হাজার টাকার ডিপিএস পলিসি করি। ২০১৪ সালে পলিসিটির মেয়াদপূর্তি হয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো চেক পাইনি।
মোবাইলফোনে শনিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গোল্ডেন লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নূর মোহাম্মদ ভূইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমবার রিসিভ করে কোনো কথা বলেননি তিনি। পরে আবার একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
এমএফআই/এসএইচ/এইচএ/