গ্রামীন টেলিকম সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ কল্যাণ গ্রামীণ টেলিকমে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু ওই সময়কালে ৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে গ্রামীণ কল্যাণকে প্রায় ১ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা লাভ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল তদন্ত করছে এ অস্বাভাবিক লেনদেনের।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে অভিযোগ করেন, মূলত কর্মীদের লভ্যাংশের অংশ ও শ্রম কল্যাণ তহবিলে অর্থ প্রদান থেকে বিরত থাকতেই এ হঠকারিতা করেছে গ্রামীণ টেলিকম। কারণ, গ্রামীণ টেলিকমে এ অর্থ থাকলে লাভের একটি বড় অংশের টাকা কর্মীদের ও শ্রম কল্যাণ তহবিলে দিতে হতো।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের অংশ হিসেবে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের উপ-পরিচালক ফেরদৌসী হোসেন গত ১৫ মার্চ গ্রামীন কল্যাণকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থের লভ্যাংশ দেওয়ার সপক্ষে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের অনুলিপি, উৎসে কর্তিত কর সরকারি কোষাগারে জমা দানের চালানের সত্যায়িত অনুলিপি, গ্রামীণ টেলিকমের মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের সত্যায়িত অনুলিপি তদন্তের স্বার্থে গ্রামীণ টেলিকমকে সাতদিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত ২০ মার্চ এনবিআরে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দেয় গ্রামীণ টেলিকম। বর্তমানে তদন্ত চলমান আছে।
গ্রামীণ টেলিকমের জেনারেল ম্যানেজার মো. নাজমুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের সব লেনদেন স্বচ্ছ। আমাদের কোনো কিছুতে কোনো গোপনীয়তা নেই। আর তাই এনবিআর থেকে কাগজপত্র চাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমরা সকল কিছু জমা দিয়েছি’।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের অভিযোগ, শুধু গ্রামীণ কল্যাণই নয়, এমন আরো নানা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকম তাদের অর্থ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছে। যার ফলে শ্রমিকরা শ্রম আইন অনুসারে লভ্যাংশের অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে শ্রম কল্যাণ তহবিলও প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছে না। পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকম করফাঁকি দিচ্ছে বিপুল হারে।
অন্যদিকে লভ্যাংশের মুনাফা না দেওয়ায় গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মীরা মোট ১৪টি মামলা করেছেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের পাওনা ১০৮ কোটি টাকা না দেওয়ায় শ্রম কল্যাণ তহবিল গত বছরের ১৯ অক্টোবর চিঠি দিলেও সে অর্থ এখনো পরিশোধ করেনি গ্রামীণ টেলিকম।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
ইউএম/এএসআর