তুলা আমদানিতে বিশ্বের তৃতীয় আমদারিক দেশ বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে বস্ত্রশিল্পের চাহিদা মেটাতে উৎপাদনে রয়েছে প্রায় ৫শ’ সুতাকল।
বস্ত্র এবং সুতা ব্যবসায়ী সূত্রের তথ্যে জানা যায়, দেশে প্রতি বছর চাহিদা বাড়ছে প্রায় তিন লাখ বেল হারে। যেখানে দেশের উৎপাদন বাড়ছে মাত্র ১৫ হাজার বেল হারে। ২০২১ সাল নাগাদ দেশে তুলার চাহিদা বেড়ে হবে ৭৬ লাখ বেল। বর্তমানে বিপুল চাহিদার মাত্র ১ শতাংশ তুলার যোগান আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। ফলে বাধ্য হয়েই প্রায় শতভাগ আমদানি করতে হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬২ লাখ বেল তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ।
এ অবস্থায় ভারত থেকে তুলা আমদানিতে জটিলতা থাকায় কয়েক বছর আগে থেকেই তুলার নতুন আমদানি বাজার খুঁজছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেই সম্ভাব্য তুলার বাজার এখন আফ্রিকা। সেক্ষেত্রে তুলা আমদানির ব্যয় বেশি হতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু আফ্রিকান তুলা রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশে এসে তাদের উৎপাদিত তুলা প্রতিযোগিতামূলক দামে দিতেই রাজি হচ্ছেন।
রোববার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর ওয়েস্টিনে আফ্রিকান-এশিয়ান তুলা ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলন হয়েছে। এটাকে বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) সম্মেলন আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) গ্রুপের সদস্য ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্সিং কর্পোরেশন (আইটিএফসি) তুলা উন্নয়ন ও পার্টনারশিপ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সেখানে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে আফ্রিকান টেক্সটাইল কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাবা আতে জানান, বাংলাদেশের বাজারে তারা ব্যাপক আকারে প্রবেশ করতে চান। এজন্য প্রতিযোগিতামূলক দামেই তারা তুলা বিক্রি করবেন।
ভারত থেকে তুলা আসতে ১৫ দিন সময় লাগে অন্যদিকে আফ্রিকা তুলা আসতে সময় লাগে প্রায় ৪২ দিন এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আফ্রিকা থেকে সময় বেশি লাগলেও আমাদানিতে কোনো সমস্যা দেখছি না। আর ভারতের চেয়ে আফ্রিকার তুলার মানও ভালো।
কীভাবে তুলার আমদানি বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আফ্রিকান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আফ্রিকান-এশিয়ান তুলা ব্যবসায়ীদের বি টু বি সম্মেলনে এসে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির প্রধান সহায়ক হবে পোশাক শিল্প। এজন্য পোশাক তৈরির কাঁচামাল তুলার পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করতে হবে। সুতা আমদানিতে একক দেশ নির্ভরতা কমাতে হবে।
তুলা ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে যোগ দেওয়া স্কয়ার ফ্যাশনের কাঁচামাল বিভাগের কর্মকর্তা তাসলিমুল হক বলেন, এখন আফ্রিকা থেকে প্রায় ১০ শতাংশ আমদানি হচ্ছে। ভারতের বিকল্প যাতে আফ্রিকা হয় সেই বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৭
এসএ/এমজেএফ