বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা এই ঘাসেই নিজের প্রয়োজন মেটান। এরপর বাড়তি ঘাস বাজারে বিক্রি করেন।
আরেকজন মাহফুজুর রহমান। তার বাড়ি কামারপাড়া গ্রামে। পেশায় কৃষক। গবাদি পশুপালন করেন এই কৃষক। এর পাশাপাশি বিঘাখানেক জমিতে লাগিয়েছেন নেপিয়ার জাতের ঘাস। এই ঘাস নিজের গবাদি পশুগুলোকে খাওয়ান। আর মাঝেমধ্যেই উদ্বৃত্ত ঘাস বিক্রি করেন বাজারে। আয় করেন বাড়তি অর্থ।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় নেপিয়ার ঘাস চাষ করে বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর প্রায় দু’শ কৃষক-পরিবার।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কার্যালয়সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় দু’শ কৃষক-পরিবার ২৫ একর জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছেন। এদের মধ্যে অনেক কৃষক এ জাতের ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষের আওতায় এনেছেন। দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নেপিয়ার ঘাসের চাষ।
ঘাস পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক সোহেল রানা। থোকা থোকা ঘাসের গোড়ায় অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছেন পাঁচন। খেতের ভেতরে জন্মানো আগাছা পরিষ্কার করছেন তিনি। বিশ্বনাথপুর গ্রামের এই কৃষক প্রায় দুই বিঘা জমিতে নেপিয়ার জাতের ঘাস লাগিয়েছেন।
তিন বছর ধরে তিনি এ জাতের ঘাস চাষ করে আসছেন। নিজের চাহিদা মিটিয়ে প্রত্যেকবার তিনি প্রচুর পরিমাণ ঘাস বাজারে বিক্রি করেন। এই ঘাসই তার সংসারে স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছে।
এসব কৃষক বাংলানিউজকে জানান, নেপিয়ার ঘাস চাষ অত্যন্ত লাভজনক। প্রথমে তারা গবাদি প্রাণির চাহিদা মেটাতে এই ঘাস চাষ শুরু করেন। বর্তমানে এ উপজেলার অনেক কৃষকই তাদের দেখাদেখি নেপিয়ার ঘাস চাষ করছেন।
এক মুঠো (আটি) ঘাস স্থানীয় হাটবাজারে ১০ টাকা দরে বিক্রি করা যায় বলেও যোগ করেন এসব কৃষক।
সোনাতলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন (ভিএস) ডা. শারমিন আক্তার বাংলানিউজকে জানান, অন্য ফসলের তুলনায় নেপিয়ার ঘাস বেশ লাভজনক। স্বল্প খরচে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয় নেপিয়ার ঘাস চাষে।
এ ঘাসের চারা একবার জমিতে লাগালে তিন বছরের মধ্যে নতুন ভাবে লাগানোর প্রয়োজন হয় না। ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ঘাস নেপিয়ার।
গবাদি প্রাণির প্রিয় খাদ্য হিসেবে এ ঘাসের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। কেউ নিজের গবাদি প্রাণীকে খাওয়ানোর জন্য, কেউবা বিক্রির জন্য জমিতে এ জাতের ঘাস চাষ করেছেন। আবার অনেকে বাণিজ্যিকভাবে নেপিয়ার ঘাষ চাষ করছেন। যোগ করেন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম