সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে লালবাগের সেগুন কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত আলোচনা সভায় ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, একটি বিশেষ এজেন্ডা নিয়ে আর্ন্তজাতিক একটি কুচক্রি মহল এ শিল্প ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এক শ্রেণীর পরিবেশবাদী ও বিসিক।
তিনি বলেন, আমাদের কোন সময় দেওয়া হয়নি। অথচ হাজারীবাগের সব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর বিচার আমরা সরকারের কাছে চাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাই। এ শিল্প রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। বিসিক আদালতে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে। আমরা চাই আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিসিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
সামনে শব-ই-বরাত, রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। চামড়া সংগ্রহের সবচেয়ে বড় চার উপলক্ষ। এরইমধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে, বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে। কাচাঁ চামড়া ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা পাবেন। ব্যাংকের লোন রয়েছে শতশত কোটি টাকা, সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে। তাই এসব ক্ষতিপূরণ বিসিককেই দিতে হবে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন বলেন, কেবল আমাদের দোষ দেওয়া হয়, বলা হয় আমরা চামড়া শিল্পপল্লিতে যাই না। কিন্তু বিসিক ১৪ বছরে কেনো চামড়া শিল্প পল্লি গড়ে তুলতে পারলো না, সে কথা কেউ বলেনা। ১৮ মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের সিইটিপি তৈরির জন্য ৫ বছর আগে কার্যাদেশ নিয়েও চায়না ঠিকাদার কেনো তা তৈরি করতে পারলো না সেকথা কেউ বলে না। ওয়ার্ক পারমিট না থাকা অবস্থায়, পর্যটক ভিসায় এসে তারা এদেশে কিভাবে কাজ করছে কারো মনে সেই প্রশ্ন নেই।
এখন চামড়া শিল্পপল্লিতে আমরা যখন আড়াই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছি, আরো সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা যখন বিনিয়োগের মুখে, তখন জানা যাচ্ছে, চায়নাদের বানানো সিইটিপি আর্ন্তজাতিক মানের নয়। বিদেশি বায়াররা সিইটিপির মান নিয়ে যখন কথা বলতে শুরু করেছেন, তখন চায়না ঠিকাদার বাদ দিয়ে নতুন অভিজ্ঞ ঠিকাদার নিয়োগেরও কোন পদক্ষেপ নেই।
এই অবস্থায় অমাদের সব বিনিয়োগ হুমকিতে পড়েছে। আমরা সাভারে বিনিয়োগ করা অর্থের নিশ্চয়তা চাই। কারণ পরিবেশবাদীরা আবার ধলেশ্বরী নষ্টের অভিযোগ করলে আমরা আবারো ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
পরিবেশবাদীদের অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা, টঙ্গীতে তুরাগ, চট্টগ্রামে কর্ণফুলি টেক্সটাইলের কেমিক্যালে নষ্ট হলেও তারা কেবল বুড়িগঙ্গা নষ্টের জন্য ট্যানারিকে দায়ী করেছে। এটা পাটশিল্প বন্ধ করার সময়ে করা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও তিনি দাবি করেন।
আলোচনায় অংশ নেন এ খাতের ১৯ সংগঠনের নেতারা। তারা অবিলম্বে চামড়া শিল্প খাত বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ খাত থেকে কম হলেও বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার করে আয় হবে। এ খাতে জড়িত আছে সারাদেশের কম হলেও কয়েক লাখ শ্রমিক। তাই প্রধামনমন্ত্রী ছাড়া এখন আর এ খাত বাচাঁনোর আর কারো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৭
আরএম/জেডএস