এতে কোরবানি দাতারা কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এই কম দামের লোকসান গিয়ে পড়বে চামড়ার টাকার ভাগিদার গরীব অসহায় মানুষজনই।
মৌসুমী চামড়া ক্রেতারা মাপজোখ না করে 'হাওয়াই' দামে কিনছেন চামড়া। এমনটিই দেখা গেল রংপুরের সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করিণী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
প্রতিবছর ঈদের আগে সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেয়।
গত ২০ আগষ্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত দামে রাজধানীতে লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট সর্বোচ্চ ৫০-৫৫ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ৪০-৪৫ টাকা।
এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট সর্বোচ্চ ২০-২২ টাকা, বকরির চামড়া দাম প্রতি বর্গফুট ১৫-১৭ টাকা ও মহিষের চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ২৫ টাকা নির্ধারণ করা দিয়েছিল।
বিশ্ববাজারে চামড়ার মূল্য বিবেচনায় নিয়ে দেশের চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
এভাবে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হলেও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে সেই দামের তোয়াক্কা নেই। তারা নিজেদের টিক করা দামে চামড়া কিনছেন, যেটা গ্রামের মানুষের কাছে 'হাওয়াই' নামেই পরিচিত।
রংপুর সদরের পালিচড়া গ্রামে চামড়া কিনছেন মৌসুমী ব্যবসায়ী ছাইফুল ইসলাম।
৪৬ হাজার টাকা দামের একটি দেশি গরুর চামড়া কিনেছেন মাত্র ৭০০ টাকায়। যা সরকারের ঠিক করে দেয়া দরের আনুমানিক অর্ধেক বলে জানালেন বিক্রেতা আলম।
চামড়া ক্রেতা ছাইফুল বললেন, একটু লাভের আশায় বছরে একবার চামড়া কিনি। এজন্য হাওয়াই দরেই কেনা হয়।
৩১ হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া মাত্র ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন পালিচড়া গ্রামের আমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে চামড়া আর বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়নি। গ্রামের একজন কিনে নিয়েছেন, তিনি শুধু ঈদেই চামড়া কেনেন।
চামড়া বিক্রেতারা বলছেন, এভাবে কম দামে বিক্রি করলে যারা চামড়ার টাকার ভাগিদার, সেই গরীব মানুষজনের ভাগে যাবে কম টাকা।
অথচ ওই বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী চামড়ার প্রকৃত মূল্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
গত বছর দেশে ১ কোটি ৪ লাখ পশু কোরবানি হয়েছিল। এ বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার।
কোরবানির পশুর চামড়া যাতে চোরাই পথে দেশের বাইরে না যায় সে জন্য বিজিবি এবং পুলিশ বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।
আর চামড়া সংরক্ষণের জন্য ৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চামড়ার মূল্যে ভারসম্য না থাকলে এ বছরের জন্য চামড়াকে ‘প্রোডাক্ট অফ দ্যা ইয়ার’ ঘোষণা করলেও তার উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ