তবে দেশীয় চালের সঙ্কট বাজারে রয়েছে তা মানতে নারাজ খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন এক শ্রেণীর অসাধু মিল মালিক, চালের মজুতদার ব্যবসায়ী বিভিন্ন ইস্যু কাজে লাগিয়ে গুজবে ছড়িয়ে দাম বৃদ্ধি করে চলছে।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে দেশে ষড়যন্ত্র করে চালের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলছেন, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশ চাল রপ্তানি করবে না বলে একটি মহল খবর ছড়িয়েছে। এর ফলে চালের দাম দফায় দফায় আরও বেড়ে যায় দেশীয় বাজারে। পরে দেখা যায় খবরটি সত্য নয়।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাবু বাজার ও কারওয়ান বাজারের চালের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা যায়।
সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী বিআর-২৮ কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা দরে, স্বর্ণা ও পারিজা ৫২ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই তিন প্রকার চাল গত এক সপ্তাহ আগেও ১০ টাকা কমে বিক্রি হত। এ ছাড়া ভালো মানের মিনিকেট কেজি প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে, মিনিকেট (সাধারণ) ৬০ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে চালের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য আড়তদাররা দায়ী করছেন মিল মালিকদের। আর আড়তদারদের দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
কারওয়ান বাজারের চালের খুচরা ব্যবসায়ী রইছ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, হাওরে বন্যার কারণে ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে চালের দাম এতটা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ নেই। এর পেছনে আড়তদারদের কারসাজি রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বেশি দামে কিনি, বেশি দামে বিক্রি করি। কম দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করি। কেজি প্রতি দুই টাকা লাভ করলেই যথেষ্ট।
বাবু বাজারের চালের আড়তদার আব্দুল মোমেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কোনো দোষ নেই। মিল মালিকরা বিভিন্ন সময় নানা গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়িয়ে চলেছেন। দাম এত বেশি হওয়ার মতো চালের সঙ্কটে দেশ নেই।
তবে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী বলছেন সরকার আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করছেন। তার পরেও কেন চালের দাম কমছে না। এ ক্ষেত্রে সরকারের বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে দাম আরও বাড়ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ দিকে চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অসাধু মজুতদার ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের বরাবর দায়ী করলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, চালের বাজারে এই দুর্যোগ মনুষ্য সৃষ্ট। হাওর অঞ্চলে বন্যায় ৩ শতাংশ অর্থাৎ ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান নষ্ট হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কারণে আরো ৭ লাখ মেট্রিক টন ধান নষ্ট হয়েছে। এই সুযোগে সরকারের বিরুদ্ধবাদী ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৭
এমএসি/আরআই