চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে গত মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সচিবালয়ে চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন । এর প্রভাবে মোটা ও সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
পাইকারি চাল বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, যখন দাম চড়া ছিলো তখন ধুমাইয়া (বেশি বিক্রি) বিক্রি হইচে। পাবলিক মনে করছে সামনে হয়তো আরও চালের দাম বাড়বে। কিন্তু এখন বাজারে চালের দাম কমছে কিন্তু বিক্রি কম। পাবলিকে মনে করছে সামনে চালের দাম আরও কমবে। ’
শুক্রবার নগরীর খুচরা-পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি ভারতীয় আমদানি নির্ভর চাল এখনও বাজারে এসে পৌঁছায়নি। বর্তমানে পাইকারি বাজারে ভারতীয় এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) ৫০ কেজি স্বর্ণা ২ হাজার ৪২০ এবং এলসি রতনা ২ হাজার ৬২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব চাল পাটের বস্তায় বিক্রি হচ্ছে। তবে প্লাস্টিকের বস্তায় আসলে বস্তা প্রতি দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কমবে।
মিরপুর-১ নম্বরের পাইকারি চাল বিক্রেতা সফিকুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, এখনও পাটের বস্তায় বাজারে চাল আসছে। এলসি চাল এখনও আমাদের হাতে আসেনি। তবে আসলে আরও দাম কমবে। ’
১৭টি পণ্য সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটের বস্তা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি অন্যতম। ফলে এলসি চালে বন্দরে প্লাস্টিকের বস্তায় আসলেও নতুনভাবে পাটের বস্তায় ভরতে হতে। ফলে ব্যবসায়ীদের বাড়তি করে প্রতিটা পাটের বস্তা ৩৫ টাকা দরে কিনতে হয়। এর পাশাপাশি লেবার খরচও আছে। এলসি চাল দ্রুত বাজারে পৌঁছানো এবং খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে প্লাস্টিকের বস্তা সাময়িকভাবে ব্যবহার করা যাবে। ফলে কেজি প্রতি চালের দাম ১ থেকে ২ টাকা কমবে।
২১ সেপ্টেম্বর আগামী ৩ মাস বিদেশ থেকে আমদানি করা চাল সংরক্ষণ বা পরিবহনে পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করা যাবে। তবে দেশে উৎপাদিত চাল সংরক্ষণ বা পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে হবে। বুধবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বর্তমানে পাইকারিতে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) পাইজাম ২ হাজার ৫০০, লতা ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবস্তা নওগাঁ মিনিকেট ২ হাজার ৮০০, কুষ্টিয়া মিনিকেট (রশিদ) ২ হাজার ৯৫০, চাঁপাই মিনিকেট ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কুষ্টিয়া রশিদের মিনিকেটের প্রতি বস্তার দাম আগে ছিলো ৩ হাজার ৫০ টাকা। এখন ২ হাজার ৯৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে ৫০ কেজি চালে দাম কমেছে একশ’ টাকা। তারপরও চাল বেচাকেনায় ভাটা।
মিরপুর মেসার্স নিউ চিশতীয়া রাইস এজেন্সিতে প্রতিদিন ৩০০ বস্তা চাল বিক্রি হতো অথচ এখন তা একশ’তে নেমে এসেছে। আড়ত মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, চাল এখন বেচাকেনা একেবারেই কম। ক্রেতারা ভাবছে সামনে আরও কমবে। তবে মোটা চালে কিছুটা কমলেও চিকন-সরু চালের দাম কমবে না। কারণ সরু চাল এলসি হয় না। তবে মোটা চাল ভারত থেকে আসছে। অঘ্রানে নতুন ধান না আসা পর্যন্ত দাম একেবারে কমবে না। তবে প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি চাল আসলে দাম আরও কমবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এমআইএস/আরআই