সেটা হলো, শুধু জমির মূল্য পরিশোধ করলেই হবে না সঙ্গে গাছ-পালা, পুকুর খনন, মৎস ও জমির মালিকদের উপার্জনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নতুন এসব দাবি মেটাতে আরও একধাপ বাড়ছে প্রকল্পের ব্যয়।
ফলে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে প্রথম সংশোধনী আসছে প্রকল্পে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়সূত্র এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রণালয়-সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। জুন ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিলো। এখন প্রথম সংশোধনে ব্যয় বেড়ে ৩ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকায় দাঁড়াচ্ছে। সময় বাড়ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ। শুধু জমিতে মূল্যবান সম্পদ বাবদ নয় অন্যান্য খাতের কারণেও ব্যয় বাড়ছে ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৮৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটির জন্য ৬ হাজার ৬৯ দশমিক ১৯ একর জমি অধিগ্রহণ করার কথা ছিল। এখন এই খাতে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১২’শ কোটি টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান (পরিকল্পনা উইং)এনায়েত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সংশোধিত প্রকল্পে ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। প্রকল্প এলাকায় জমির দাম তিন গুণ হয়েছে। এছাড়া পুনর্বাসন খাতেও ব্যয় বাড়ছে। প্রথমে এখাতে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। এখন সে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১১’শ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পের আওতায় সড়কসহ বেশ কিছু অবকাঠামোগত কাজ করা হবে। একটা টাগ বোটও সংগ্রহ করা হবে। এখাতেও নতুন ব্যয় যুক্ত হচ্ছে।
পুনর্বাসন খাতে নানা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণেও ব্যয় বাড়ছে। একই সঙ্গে পরামর্শক খাতেও ব্যয় বাড়ানো হবে। প্রথমে এখাতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০০ কোটি টাকা এখন ১ হাজার ১২৩ কোটি।
পরামর্শকসেবা ছাড়াও বিস্তারিত ড্রইং, ডিজাইন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন খাতে নকশার জন্য জনবল নিয়োগ দেয়া হবে। নতুন করে এখাতে জনবল নিয়োগের জন্য ব্যয় বাড়বে।
মন্ত্রণালয়-সূত্র জানায়, মূল প্রকল্পে ৫ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৫৪ কোটি টাকা। কিন্তু এখন এই পথে আরও কিছু কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ করা হবে। ফলে আরও ২৬ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে এখাতে। প্রকল্প এলাকা রজপড়ায় উচ্চতা সাড়ে তিন মিটার থেকে সাড়ে চার মিটারে উন্নীত করার জন্যও ব্যয় বাড়ছে সাড়ে তিন কোটি টাকা।
পায়রা বন্দরের কার্যক্রম সহায়তার জন্য একটি টাগবোট দেশীয় শিপইয়ার্ডে নির্মিত হচ্ছে। এটি নির্মাণ করতে ব্যয় হবে ৪১ কোটি টাকা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে এগিয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের স্বপ্নের প্রকল্প পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের বিশাল নির্মাণযজ্ঞ। ১৬ একর জমিতে স্বল্প পরিসরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান আছে। পায়রা বন্দর বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে এখানকার আর্থ-সামাজিক জীবনচিত্র। ভবিষ্যতে জমির দাম আরো কয়েকগুণ বাড়বে। এ কারণে স্থানীয়রা জমি ছাড়তে চাচ্ছেন না। এখনই জমির দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
এমআইএস/জেএম