সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাল ও কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। বর্তমান বাজারে সাধারণ মানুষের এখনও অস্বস্তি রয়ে গেছে চালসহ সব ধরনের সবজিতে।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট ও আজিমপুর কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে মিনেকেট চাল ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নিম্ন আয়ের মানুষের মোটা চালও কিনতে হচ্ছে পঞ্চাশের কোটায়।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০- ১৬০ টাকায়, ঢেঁড়শ ৫৫-৬০ টাকায়, বেগুন ৭০-৮০ টাকায়, পটল ৫৫-৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, বরবটি ৭৫-৮০ টাকা, গাজর ৫৫-৬০ টাকা, ধনিয়াপাতা ২০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫৫-৬০ টাকা, শিম ১৬০-২০০ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা ও আলু ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি পিস লাউ ও জালি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা (সাইজ অনুযায়ী)। তবে বাজার ভেদে এই সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমবেশি রয়েছে।
অতিবৃষ্টি ও গেল বন্যার কারণে সবজির বাজারে দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আলী হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরাও চাই সবজির দাম কমে থাক। বেশি দামে বিক্রি করেও আমাদের লাভ বেশি হচ্ছে না। বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বলে দামও বেশি। ’
আজিমপুর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মানিক মিয়া বলেন, ‘সবজির দাম এভাবে বাড়তিই থাকবে। মনে হচ্ছে না শীতের আগে দাম কমবে না। শীতকালে নতুন সবজি এলে বাজার স্বাভাবিক হবে। ’
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপণ্য চালের দামের কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। তবে এই পরিবর্তন বাজার স্বাভাবিক হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
খুচরা বাজার অনুযায়ী, প্রতিকেজি মিনেকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। আর কেজিতে নাজিরশাইল ৬৭ টাকা, বিআর-২৮ ৫০, স্বর্ণা ও পারি চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা করে।
হাতিরপুল বাজারের চাল বিক্রেতা সোলায়মান মিয়া জানান, গেল দুই সপ্তাহ থেকে এই সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা করে কমেছে। এর থেকে কমার আর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জন্য অস্বস্তি থেকে যাবে বলেই মনে করেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আবদুল আলীম। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে আমাদের মতো ক্রেতাদের চলতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে মাছ বাজারে বড় চিংড়ি ৭০০, মাঝারি ৬৫০ ও ছোট চিংড়ি ৬০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাতল মাছ ১৮০ টাকায়।
এছাড়া রূপচাঁদা ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ টাকা ও পাঙ্গাস মাছ ১২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, বোয়াল ২৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দামও। গরুর মাংস প্রতিকেজি ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসি প্রতিকেজি ৭০০-৭৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি মুরগি সাইজ অনুযায়ী ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস।
শুক্রবার ঢাকার বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর দেশীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ৫০ টাকা ছিল। এছাড়া দেশি রসুন ৮০, আমদানি করা রসুন ৮৫ টাকা এবং আমদানি করা আদা ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া চিনি ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ এবং আমদানি করা ডাল ৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৭
এমএসি/এমএ