ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

শীতের সবজিতে দামের উত্তাপ

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
শীতের সবজিতে দামের উত্তাপ রাজশাহীর বাজারে উঠেছে ফুলকপি, তবে দাম বেশি হওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের

রাজশাহী: টমেটো, তাজা শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, নতুন আলু, লাউ, পালংশাক, লালশাক-কি নেই বাজারে? শীতের সবজি বলতে যা বোঝায় সবই আছে। কাঁচা বাজারে সবজির ডালিগুলো যেন জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শেষ কার্তিকের বাজারে শীতের আগাম শাক-সবজি পেয়ে খুশি বিক্রেতারা।

কিন্তু দাম বেশি থাকায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ শীতের এসব সবজির কাছে ভিড়তেই পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে মাছ-মাংসের চেয়েও বেশি সবজির দাম।

 

এজন্য রাজশাহীর বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলেও ক্রেতা কম। শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে রাজশাহীর সাহেব বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে এ চিত্র।

কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোয়েব আলী বাংলানিউজকে বলেন, এবার বন্যায় আগাম শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে রাজশাহীর মোহনপুর, বাগমারা, তানোরসহ আশপাশের উপজেলা ও নওগাঁসহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জমিতে থাকা শীতকালীন সবজি তলিয়ে গেছে। রাজশাহীর বাজারে উঠেছে ফুলকপি, তবে দাম বেশি হওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদেরফলে যেখানে কার্তিকের শুরুতেই শীতকালীন সবজিতে বাজার ভরে যায় সেখানে, এবার কার্তিকের শেষে সে সবজি আসছে। তাই দাম গতবারের চেয়ে বেশি। তবে পৌষের মাঝামাঝি থেকে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়বে। তখন দামও কমে আসবে।    

মহানগরীর প্রধান এ কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফুলকপি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, শিম ১২০, টমেটো ১২০, গাজর ১২০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা কেজি, ধনেপাতা ১৫০ টাকা, পালংশাক ৮০ টাকা, নতুন আলু ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা ও বরবটি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।   

এছাড়া জলপাই ৪০ টাকা, ছোট করলা ৮০, বড় করলা ৬০, কাঁকরোল ৫০, বেগুন ৬০, পটোল ৪০, লাউ (প্রতি পিস) ৩৫-৪০, চালকুমড়া ২৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০, পুরান আলু ১৬ থেকে ২০, কাঁচামরিচ ১০০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লালশাক ৪০ টাকা, লাউশাক ৫০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা কেজি ও লেবু ২০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

বাজারে আসা নজরুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, বাজারে নতুন সবজি আসা শুরু হলেও এখনও সবজির দাম তেমন কমছে না। ফলে নতুন সবজি দেখে সবাই খুশি হলেও দাম বেশির কারণে কিনতে পারছেন না। দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন। এছাড়া বাজারে দাম বেশি থাকায় ফুলকপি, শিম, মুলাসহ শীতের অনেক সবজি পুষ্ট না হতেই ক্ষেত থেকে তুলে আনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এ ক্রেতা।  

বাজারে প্রতিকেজি ছোটমাছ রকম ভেদে ১১০ থেকে ৪শ’ টাকা, রুই-কাতল ১৮০ (ছোট) টাকা, বড় কাতল ৫০০ টাকা, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, পাংগাস ১১০ থেকে ২০০ টাকা, ইলিশ ৭০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা (৫-৬শ’ গ্রাম), বড় চিংড়ি ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১১৫ টাকা, সোনালি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, দেশি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪৫০ টাকা, খাসির মাংস ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিহালি সাদা ডিম ২৬ টাকা, লাল ডিম ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজশাহীর বাজারে উঠেছে ফুলকপি, তবে দাম বেশি হওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদেররাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর রাজশাহীতে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হয়েছে।  

এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে শীতের আগাম সবজির চাষ করা হয়েছে। এ পাঁচ হাজার হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। যার জন্য রাজশাহীর বাজারে সবজির দাম এখন কিছুটা বেশি। তবে শীতের সবজি পুরোদমে উঠতে শুরু করলে এ দাম কমে আসবে বলেও মন্তব্য করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।