মাসখানেক আগেও বাজারে সবজির দামের যে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি ছিলো, তা সাম্প্রতিক বন্যায় ফসলহানির কুফল হিসেবেই মনে করা হয়েছিলো। ক্রেতারা সবজির দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে সাময়িক ভোগান্তি হিসেবে মেনে নিলেও শীতকালীন সবজি বাজারে এলে দাম কমে আবার স্বাভাবিক হবে, সেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন।
তবে, ডিসেম্বরের শুরুতে শীতকালীন সবজি বাজারে প্রচুর পরিমাণে উঠলেও দাম কমে এখনও ‘স্বাভাবিক’ পর্যায়ে আসেনি। কিছুদিন আগের সেই আগুনে দাম না থাকলেও সবজির দরে এখনও ছোঁয়া লাগেনি শীতল বাতাসের।
আর পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে এখন তাপ ছড়াচ্ছে মধ্যগগনের সূর্যের ন্যায়। সহসা দাম তো কমবেই না, বরং দাম আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন বিক্রেতারা। এক কথাই দেশি ও ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ, উভয়ের দামই এখন ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে!
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর ) রাজধানীর মোহম্মদপুর কাঁচাবাজার ও পুরান ঢাকার নয়াবাজার ঘুরে এ সব তথ্য পাওয়া যায়।
সর্বশেষ সবজির খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিকেজি ধনিয়াপাতা ৬০ টাকা, বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, সিম ৩০ টাকা,দেশি টমেটো ৬০ টাকা ও আমদানি করা টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, আলু ২০ টাকা,প্রতি পিস বাঁধাকপি ২০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ২০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পেঁয়াজের পাতা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল শাক ১৫ টাকা ও পালং শাক ১৫ টাকা আটিতে বিক্রি হচ্ছে।
তবে খুচরা বিক্রেতারা দাম আরও কমবে এমন আশার বাণী শোনাচ্ছেন ক্রেতাদের। পুরান ঢাকার নয়াবাজারের সবজির খুচরা বিক্রেতা আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সবজির যোগান মোটামুটি স্বাভাবিক হওয়ায় বাজার এখন স্থিতিশীলতার দিকে। তবে মাসের শেষ দিকে আরও কিছু সবজির দাম কমতে পারে।
খুচরা বিক্রেতাদের এমন আশ্বাসে আস্থা রাখছেন ক্রেতারাও। একই বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা সৈকত বলেন, সবজির বাজারে এখন আর আগের মতো আগুন নেই। বাজার কিছুটা স্থিতিশীল।
পেঁয়াজের খুচরা বাজারের দর অনুযায়ী এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারের পেঁয়াজের খুচরা বিক্রেতা আতিক বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারেও নাকি পেঁয়াজের দাম বেশি। আর আমরা বেশি দাম কিনে বেশি দামেই বিক্রি করছি।
মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মো.শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম আমাদের নাগালের বাহিরে। দ্রুত দাম না কমলে ক্রেতারা হয়তো পেঁয়াজ কেনাই বন্ধ করে দেবে।
এদিকে চালের বাজারে এখনো অস্থিরতা চলমান। প্রতিকেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা,বিআর-২৮ কেজিপ্রতি ৫০-৫৫ টাকা ও স্বর্ণাও পারিজা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৬টাকায়।
অন্যদিকে সর্বশেষ খুচরা বাজার দর অনুযায়ী দেশী রসুন ৮০ টাকা, আমদানি রসুন ৮৫ টাকা,চিনি ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আমদানি করা মসুর ডাল ৬০ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও মাছ মাংসের দাম।
মাছের সর্বশেষ বাজার দর প্রতিকেজি কাতল মাছ ২৪০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১২০ টাকা, রুই মাছ ২৩০-২৮০ টাকা, সিলভারকার্প ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিংমাছ ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজার রয়েছে গত সপ্তাহের দর অনুযায়ী। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কক মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এমএসি/আরআই