ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৈশাখী কেনাকাটায় জমজমাট বসুন্ধরা সিটি

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৯
বৈশাখী কেনাকাটায় জমজমাট বসুন্ধরা সিটি বৈশাখী কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা/ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটিকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলা ভাষাভাষীরা। দিবসটি কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই জমে উঠেছে বৈশাখী কেনাকাটা। দেশের অন্যতম বৃহত্তম শপিং মল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সেও বৈশাখ কেন্দ্রিক কেনাকাটায় ভিড় করছেন ক্রেতারা।

সোমবার (০৮ এপ্রিল) রাজধানীর পান্থপথের এ মলে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ফ্লোরেই দর্শনার্থী এবং ক্রেতা সাধারণের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। মেয়েদের শাড়ি, থ্রি-পিস ও জুয়েলারি এবং ছেলেদের পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে ভিড় সব থেকে বেশি।

মার্কেটের লেভেল ১-এ থ্রি-পিস এবং ৪ ও ৫-এ শাড়ি ও জুয়েলারি দোকান সবচেয়ে বেশি। বৈশাখের কেনাকাটায় এই ফ্লোরগুলোর দোকানগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারাএছাড়া এবার পোশাকের ডিজাইন এবং রঙে এসেছে বৈচিত্র্য। লাল-সাদার পাশাপাশি অন্যান্য রঙের নকশার কাজ প্রাধান্য পেয়েছে ডিজাইনে। মেয়েদের শাড়ি সর্বনিম্ন এক হাজার ৫০টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর থ্রি-পিসের মূল্য নূন্যতম ৮৫০ টাকা থেকে শুরু।

তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী নাদিয়া বিনতে বারেক বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবারতো লাল-সাদা দিয়েই কিছু না কিছু পরি। এবার ভাবছি অন্য রঙের কিছু কিনবো। দোকানগুলোতে দেখলাম কালেকশনও এসেছে বেশ। বিশেষ করে গোলাপি, সবুজ, হলুদ আর নীলের কিছু নতুন ডিজাইনের থ্রি-পিস ও শাড়ি এসেছে। এগুলো থেকেই কিনবো এবার।

কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারাএছাড়াও নতুন সব কালেকশনের জন্য আড়ং এবং দেশি দশের বসুন্ধরা শাখায় ঢু মারছেন ক্রেতারা। দেশি দশের ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত আমাদের বেচাকেনা খুবই ভালো হয়েছে। পহেলা বৈশাখের আগে আরও দুইদিন সাপ্তাহিত ছুটি আছে। আশা করছি শেষ মুহুর্তে বিক্রি আরও বাড়বে।

পোশাকের পরে নারীদের আগ্রহ দেখা যায় জুয়েলারির দিকে। এবার এমেটি সোনা এবং অ্যান্টিক ডিজাইনের গহণার প্রতি নারীদের বেশি আগ্রহ বলে জানিয়েছেন মলের জুয়েলারি বিক্রেতারা। সোনার অলংকারও কিনছেন কেউ কেউ। বৈশাখের প্রথম দিন বাঙালিদের ঐতিহ্যবাহী হালখাতার আয়োজন করবেন শপিং মলের জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে স্বর্ণালংকারের মজুরির ওপর থাকছে বড় মূল্যছাড়।

নারীদের পাশাপাশি কেনাকাটায় ব্যস্ত আছেন পুরুষরাও। পায়জামা, পাঞ্জাবি আর স্যান্ডেলের দিকে বেশি আগ্রহ তাদের। লেভেল ১, ২, ৩ ও ৭ এ আড়ং, দেশি দশ, প্লাস পয়েন্ট, স্নোটেক্স, ইনফিনিটি, রিচম্যান, ইজিসহ বেশ কয়েকটি দেশীয় ব্র্যান্ডের দোকানগুলো থেকে পাঞ্জাবি কিনতে দেখা যায় পুরুষ ক্রেতাদের।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম রুমান বাংলানিউজকে বলেন, বৈশাখ মানেই পাঞ্জাবি। সঙ্গে মানানসই এক স্যান্ডেল। সেগুলোই দেখছি। এবার পাঞ্জাবিতে নতুন কিছু ডিজাইন এসেছে। বিশেষ করে কাবলি এবং ভিনটেজ কিছু ডিজাইন। তেমনি একটি পাঞ্জাবি কিনেছি। এখন স্যান্ডেল কিনবো।

এদিকে, পোশাকের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস কিনতেও বেশ আগ্রহ দেখা যায় ক্রেতাদের মাঝে। নতুন বছরে একটা নতুন স্মার্টফোন যেনো চাইই চাই। শপিং মলের লেভেল ১ এবং ৬-এ স্মার্টফোন এবং গ্যাজেটসের দোকানগুলোতে নতুন সব মুঠোফোন এবং গেজেটস আইটেম দেখছেন ক্রেতারা। এগুলোর মধ্যে স্যামসাং, হুয়াওয়ে, শাওমি এবং অপ্পো ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে বেশি ক্রেতা সমাগম লক্ষ্য করা যায়।

এবারের পহেলা বৈশাখের দিন পুরো বসুন্ধরা শপিং মলে দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আয়োজন থাকবে বলে জানিয়েছেন বসুন্ধরা শপিং মল দোকান মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি কেএম জহিরুল ইসলাম লেলিন।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বৈশাখী কেনাকাটা বেশ ভালো। শপিং মলে ব্যাপক ক্রেতা সমাগম পাচ্ছি আমরা। বৈশাখের আগের কয়েকদিন এটা আরও বাড়বে। এবার আমরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের পণ্যে বৈচিত্র্য এবং ভিন্নতা রেখেছি। তাই ক্রেতারাও বেশ আগ্রহ নিয়ে কেনাকাটা করছেন। আমরা আশা করছি, এবারের বৈশাখে আমাদের শপিং মলে কেনাকাটায় প্রায় ১০ কোটি বা তারও বেশি অংকের আর্থিক লেনদেন হবে। আর পহেলা বৈশাখের দিন পুরো শপিং মল বিশেষ সাজে সাজানো হবে। এ দিন আসা দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য নানা আয়োজন থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে। শপিং মলের প্রতিটি ফ্লোরের বিপনী বিতানগুলোও খোলা থাকবে এ দিন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
এসএইচএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।