উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রাগের ঐতিহ্যবাহী জফিন প্যালেসে ‘বাটা’ সাজিয়েছিলো তাদের লেটেস্ট সব কালেকশনের পসরা, যারমধ্যে ছিলো ইটালিয়ান, চাইনিজ, এশিয়া প্যাসিফিক কালেকশন এবং টেকনোলজিকেল রেঞ্জ বাটা ফ্লেক্সিবেল, বাটা লাইট ও বাটা ইনসোলিয়া-র প্রদর্শনী।
এছাড়া এ আয়োজনেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো বাটা হেরিটেজ রেঞ্জ ও নতুন পাওয়ার মেলো স্নিকারের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে ভক্ত-দর্শনার্থীদের।
বাটার ১২৫ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রাগের ঐতিহ্যবাহী জফিন প্যালেসে ১৩ থেকে ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলো সুবিশাল ও জাঁকজমকপূর্ণ এ আয়োজন।
পুরো হলরুমে তখন মৃদু আলো। চাপা উত্তেজনা সবার মাঝে। ঠিক সেসময় সবার দৃষ্টি কেড়ে নিলো মঞ্চের ব্যাকড্রপে সেঁটে থাকা একটা অ্যানিমেটেড হার্টবিট। ওই হার্টবিটের তালেই কাঁপছে সবার পরিচিত বাটার ‘বি’। কি অসাধারণ দৃশ্য! মন্ত্রমুগ্ধ দর্শকদের মুগ্ধতার মাত্রা বেড়ে যায় আরো, যখন ডিস্ক জকির মিউজিকের তালে তালে এক এক করে মঞ্চে প্রবেশ করতে থাকেন মডেলরা। অদ্ভুত প্রাণশক্তি নিয়ে র্যাম্প মাতিয়ে তোলেন তারা।
বাটার প্রতিটি ফ্যাশন উইকেন্ডেই তাদের নতুন রেঞ্জ ও কালেকশন প্রদর্শিত হয়। যার ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। গতবছরের মিলান ফ্যাশন উইকেন্ডের পর এবার ২০১৯ সালের আয়োজক ভেন্যু প্রাগ। সারাবিশ্বের বাটার ভক্ত, অনুরাগী ও অনুসারীরা লাইভ স্ট্রিমের মাধ্যমে এ বর্ণাঢ্য আয়োজন সরাসরি দেখতে পেরেছেন।
বাটা এ আয়োজনে প্রিমিয়াম ইটালিয়ান কালেকশনের প্রদর্শন করেছে। ইটালিতে সেরাজাতের লেদার ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য উপকরণ দিয়ে ইটালিয়ান ফ্যাশনের অনুপ্রেরণায় যা তৈরি করা হয়েছে। এ বছর ক্লাসিক বাটা ডিজাইনে নতুনত্ব সংযোজনের মাধ্যমে আনা হয়েছে চাইনিজ কালেকশন। নতুন ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এনিমেল ও ফ্লোরাল প্রিন্ট নিয়ে এসেছে নতুন এশিয়া প্যাসিফিক কালেকশন। হালফ্যাশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আরও এসেছে ‘রেড লেবেল’ নামক ফাস্ট-ফ্যাশন রেঞ্জ।
বাটার ১২৫ বছরের ইতিহাস উঠে এসেছে নতুন হেরিটেজ রেঞ্জ ‘বাটা হেরিটেজ’-এ। পুরোনো আর নতুনের দারুণ ফিউশনে আইকনিক ব্র্যান্ড কোকা-কোলা’র সঙ্গে কোলাবরেশনে তৈরি হওয়া বাটা হেরিটেজ রেঞ্জের নতুন কালেকশন এ অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়েছে। দর্শকরা বাটার নতুন পাওয়ার স্নিকার ‘পাওয়ার মেলো’র সঙ্গেও প্রথম পরিচিত হয়েছেন এ প্রদর্শনীতে। মার্শমেলো’র মতো নরম সোলের এ ‘পাওয়ার মেলো’ ফ্যাশন উইকেন্ডের পরপরই সারাবিশ্বের ভোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে।
বাটা তার পণ্য তৈরিতে সবসময়ই প্রযুক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যাতে গ্রাহকের জন্য আরও আরামদায়ক জুতো তৈরি করা যায়। প্রাগের এ ফ্যাশন উইকেন্ডে প্রদর্শিত হয়েছে এমনই কিছু প্রযুক্তি, যার মধ্যে ছিলো বাটা ফ্লেক্সিবল (স্মার্ট-ক্যাজুয়াল, যার আছে আলট্রা-ফ্লেক্সিবল আউটসোল যা জুতোকে করে ফ্লেক্সিবল ও আরামদায়ক), বাটা লাইট (পালকের মতো হালকা, ট্রেন্ডি, ইনফরমাল এবং বিল্ট-ইন শক প্রতিরোধক সম্পন্ন) ও বাটা ইনসোলিয়া (মিডিয়াম ও হাই হিল যা ব্যালেন্সের জন্য উপকারি)।
ক্যাটওয়াক ছাড়া হলের বিভিন্ন জায়গায় ছিলো জুতো প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। সেইসঙ্গে ছিলো পপ-আপ মিউজিয়াম যেখানে বাটা’র ১২৫ বছরের ইতিহাস থেকে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন জুতো ও ফুটেজ দেখানো হয়।
আর এরকম একটি বিশেষ আয়োজনে অনেক আয়োজনের ভিড়ে আরো বিশেষ কিছুর প্রত্যাশা তো ছিলোই, সেটি ভালোভাবে পূরণ করেছে বাটার ১২৫ তম অ্যানিভারসারি এডিশন ক্যাপসুল কালেকশন। অনুষ্ঠানে দেখানো হলেও তা বাজারে আসবে সামনের অক্টোবরে।
এছাড়া আরও ছিলো বাটা ইয়াং ডিজাইনারস চ্যালেঞ্জের চূড়ান্ত পর্বের আয়োজন। এ বার্ষিক আয়োজনে ইটালি, কেনিয়া ও চেক রিপাবলিকের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে পাঠানো সেরা সব ডিজাইন বাছাই করা হয়, যা থেকে নতুন এক স্নিকার প্রোটোটাইপ তৈরি করা হয়। বিজয়ী ডিজাইন দিয়ে অচিরেই বাটার নতুন স্নিকার বাজারে আসবে। এমনই সব আয়োজন শেষে ১৪ এপ্রিল পর্দা নামে দুইদিনব্যাপী বাটার ১২৫ তম অ্যানিভারসারি উদযাপন।
বাটার হেড অব গ্লোবাল মার্কেটিং প্রধান ইয়ানা বারবাতি চাদোভা সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘এ আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারা আমার জন্য বিশেষ সম্মান ও গর্বের। বাটার এতোদিনের ঐতিহ্য এমন একটা ঐতিহাসিক ভেন্যুতে এক ছাদের নিচে আনার এ প্রচেষ্টা অবশ্যই বিশেষ কিছু। বিশেষ করে যখন আপনি দর্শকসারিতে এতো এতো দর্শকের মুখে হাসি ফুটে উঠতে দেখবেন। আমাদের ট্যাগলাইনের সঙ্গে মিলিয়ে বলতে হয়, বিষয়টি আমার জন্য আবেগপ্রবণ, কিন্তু আমি কমফোর্টেবল উইথ ইট। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
ওএইচ/