ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অর্থ আদায়ে অটোমেশনে যাচ্ছে বিপিসি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫১ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৯
অর্থ আদায়ে অটোমেশনে যাচ্ছে বিপিসি

ঢাকা: দেশের একমাত্র জ্বালানি তেল ও গ্যাস আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এর অধীনে বিপণন ও বিতরণ কোম্পানি হলো পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। এসবের মাধ্যমে সারাদেশে ডিলার পর্যায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়।

জ্বালানি তেল আমদানির সব ধরনের খরচ বিপিসির নিজস্ব অর্থায়নে করলেও ডিলার পর্যায়ে তেল বিক্রির টাকা চলে যায় বিপণন ও বিতরণ কোম্পানিতে। এই অর্থের হিসাব-নিকাশের পর তা বিপিসির কাছে ফেরত দিতে কোম্পানিগুলোর সময় লাগে ছয় মাস থেকে এক বছর।

এমনকি কোনো ইনভয়েসের বিপরীতে কত টাকা বাকি আছে, সেই হিসাব মিলাতে হিমসিম খাচ্ছে খোদ বিপিসি। হিসাব মিলাতে অডিটর নিয়োগ দিয়েও কূল-কিনারা করতে পারছে না বিপিসি এই কথা স্বীকার করে নিলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সামছুর রহমান।

জানা যায়, ডিলার পর্যায়ে এক লিটার ডিজেল বিক্রি হয় ৬২ দশমিক ৫২ টাকায়, এর মধ্যে আমদানি খরচ বাবদ বিপিসির পাওনা ৫৯ দশমিক ৮১ টাকা আর বিতরণ খরচ বাবদ বিপণন কোম্পানির পাওনা মাত্র ২ দশমিক৭১ টাকা। তেল বিক্রির পুরো টাকাটাই বিপণন কোম্পানির কাছে পড়ে থাকে মাসের পর মাস। অথচ সরকারি রাজস্বখাত থেকে আমদানির ব্যয় নির্বাহকারী প্রতিষ্ঠান বিপিসির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এছাড়াও ডিপোগুলোতে তেলের মজুদ ও সরবরাহের হিসাব পেতে বিপিসিকে ধরণা দিতে হতে হয় বিপণন কোম্পানির কাছে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ণ হওয়ায় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠান অনেক ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে। এই প্রেক্ষাপটে সমস্যগুলো উত্তরণে ডিজিটালাইজ করা হবে বিপিসি ও সব বিপণন কোম্পানির জ্বালানি তেল ও গ্যাস বিক্রির অর্থ আদায় কার্যক্রম।

জানা যায়, অটোমেশন প্রক্রিয়ায় আগের মতোই ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিশেষ ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আদায়ের সঙ্গে বিপিসি ও আদায়কারী কোম্পানির পাওনা বিভিন্ন খাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভাজিত হবে ও সুনির্দিষ্ট সময়েই অটোমেশন প্রক্রিয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিপিসি ও আদায়কারী কোম্পানীর ব্যাংকের হিসাবে চলে যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক,ন্যাশনাল ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের সব শাখায় এই আদায় কার্যক্রম চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আওতায় আনা হবে বলে মন্তব্য করেন বিপিসির চেয়ারম্যান।

বিপিসির চেয়ারম্যান সামছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিপিসির জ্বালানি তেলের বিক্রয় লব্ধ অর্থ আদায়ে এই অটোমেশন কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও এই অটোমেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও বিতরণ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন একীভুত প্রতিবেদন তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়ায় দেশে জ্বালানি তেলের সরবরাহ ও মজুদের একটি সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪১ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।