সারিসারি ফুলকপি। ছবি: আরিফ জাহান
বগুড়া: বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানগড় কাঁচা বাজারে পসরা সাজানো শীতকালীন সবজির। চলতি বছরের সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার হাট ছাড়াও প্রতিদিন সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলাসহ আশ-পাশের এলাকার কৃষকরা এই বাজারে তাদের জমির উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে আসেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) মহাস্থানগড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে মাঠের বিশাল অংশজুড়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। একপাশে ডাটা আর অন্য পাশে শোভা পাচ্ছে সারিসারি বাঁধাকপি।
ভ্যানবোঝাই মুলাগুলো যেন নজর কাড়ছিল। স্তূপ থেকে ঝাঁঝ ছড়াচ্ছিলো পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের। লাল ও সবুজ রংয়ের বেগুনের তো গুণেরই শেষ নেই। করলা, পেঁপে, লাউ শোভা পাচ্ছিলো গাঢ় সবুজে। তরতাজা এসব সবজির গায়ে তখনও লেগেছিল শিশিরকণা। সবজিগুলোর ক্ষেত থেকে তুলে সরাসরি বিক্রি করতে বাজারে নিয়ে এসেছে কৃষক। ভোর থেকে তাদের এই বিক্রির আয়োজন চলে। ক্ষেত থেকে সবজি তোলার পর ভটভটি, ভ্যান, রিকশা, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সকাল ৭টার মধ্যেই কৃষকরা সবজি নিয়ে এই বাজারে হাজির হয়। বাজারে পা রাখা মাত্র স্থানীয়সহ দেশের নানা প্রান্তর থেকে আসা পাইকাররা ঘিরে ধরে কৃষকদের। যে যার মতো সবজি নিয়ে বাজারের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে পাইকাররা দরদাম কষে সবজি কিনতে শুরু করেন। এভাবেই দিনব্যাপী চলে সবজি কেনা-বেচা। বিকেল হতেই দূর-দূরান্তের পাইকারদের কেনা ছোটখাটো যানে সবজি নিয়ে ছুটে চলেন নিজ এলাকার বাজারগুলোতে। এ কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও দেখা যায়।
সিরাজুল, খয়বর আলী, মান্নান মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বাংলানিউজকে জানান, বগুড়া জেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানগড় কাঁচা বাজার সবজির সবচেয়ে বড় মোকাম। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এখানে নিয়মিত আসেন। এছাড়া স্থানীয়ভাবে বড় পাইকাররাও কেনাকাটার জন্য এ মোকামের ওপর নির্ভরশীল। তাই সবসময়ই মহাস্থানগড় বাজারে পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকে।
তারা আরও জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গতবারের থেকে এবছর শীতকালীন সবজির আবাদ ভালো হয়েছে। বাজারেও সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে এ মোকামে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ সবজির আমদানি ঘটাচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। আব্দুল মালেক, হায়দার আলী, ইব্রাহিম মোল্লাসহ অন্য পাইকাররা সবজি কিনতে নিয়মিত এ মোকামে আসেন। কারণ এখানে চাহিদা মতো প্রায় সব ধরনের টাটকা তরতাজা সবজি পাওয়া যায়।
মহাস্থানের সিংহভাগ সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায় বলেও জানান ওই পাইকাররা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
কেইউএ/এএটি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।