বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আগামী ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান ও চাল সংগ্রহে অভিযান চলবে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ২০ নভেম্বর থেকে সারাদেশে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে এবং ১ ডিসেম্বর থেকে চাল কিনবো। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রান্তিক চাষিদের তালিকা করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। সেই তালিকা ইউনিয়ন ওয়েবসাইটে চলে যাবে। এরপর উপজেলা সংগ্রহ কমিটি সেই তালিকা চূড়ান্ত করবে। চাষিদের সংখ্যা অতিরিক্ত হলে লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চাল যদি আরও বেশি পরিমাণে বিতরণ করতে পারি, তাহলে আরও বেশি ধান কিনতে পারবো। আমাদের পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ছিলো সেটি বাড়িয়ে সাতমাস করেছি। জেলেদের জিএফ (ফিফথ রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড) দেওয়া হয়। আরও অনেক জেলে আছে, তাদের চাল দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠাবে এবং অর্থ মন্ত্রণালয় যদি এটা গ্রহণ করে তাহলে আমরা সেই জেলেদেরও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ করতে পারবো। এতে সংগ্রহ বাড়বে।
ধানের উৎপাদন খরচ ২১ টাকা এবং এখন পর্যন্ত চালের মজুত ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৪৭ মেট্রিক টন জানিয়েছে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে মুজিববর্ষ, এ মুজিববর্ষ গরিব মানুষের মধ্যে প্রাণবন্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় যে সব গ্রাম পুলিশ আছে তাদের আমরা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসতেছি। গ্রাম পুলিশের সংখ্যা ৫৭ হাজার।
এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাল ও ধান সংগ্রহ খুবই জটিল প্রক্রিয়া এবং সব সময়ই প্রশ্নবিদ্ধ হয় নানান কারণে। আগে আমনে ধান কেনাই হতো না মোটেই। এ বছরই প্রথম কেনা হচ্ছে এবং অনেক বেশি। আমাদের টার্গেট ছিল দেড় লাখ মেট্রিক টন, কিন্তু চাষিরা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় গতবার চার লাখ মেট্রিকটনই কেনা হয়েছে। তারপরও প্রশ্ন উঠেছে- প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে কেনা হয়েছে কিনা- আমরা চেষ্টা করেছি। তারপরও ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে। সামনের দিনে যাতে এটি না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবো। যাতে বেনিফিট সবাই পায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। যারা তালিকায় থাকবে তারা সত্যিকারের কৃষক কিনা তা মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, গতবার আমনের উৎপাদন ছিলো এক কোটি ৫৩ হাজার মেট্রিকটন। আবহাওয়াগত কারণে এবার তার থেকে বেশি হবে। সব চাষির ধান কিনে পুষিয়ে দেওয়া সম্ভব না। কৃষকদের ধান কাটার মেশিন দেওয়ার জন্য ৫০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। সারের দাম কমানোসহ উৎপাদন খরচ কমানোর কথা বিবেচনা করছে সরকার।
পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি বিরূপ না হলে পেঁয়াজের উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ না হলেও অনেকটা মেটানো সম্ভব। পেঁয়াজের মৌসুমে আমদানিবন্ধ করার চিন্তা করছি, যাতে চাষিরা ভালো দাম পায়।
ময়েশ্চার মেশিন কেনা হচ্ছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাষিরা যখন ধান নিয়ে যায়, কর্মকর্তারা বলেন যে ধানের ময়েশ্চার ঠিক নেই। ময়েশ্চার হবে ১৪ শতাংশ। তারা ঘরে বসে কেমনে বুঝল? ময়েশ্চার ১৫ হলেই নেবে না। এজন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে একটা করে ময়েশ্চার মিটার দেবো। সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ময়েশ্চার মেপে কৃষকদের সহযোগিতা করবেন। আমনো পুরোটা না পারলে আগামী বোরো মৌসুমে ময়েশ্চার নিয়ে যাতে কোনো সমস্যা না হয় বা কৃষকের যাতে ভোগান্তি না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
এমআইএইচ/ওএইচ/