সারা বছর পণ্য মজুদ না করলেও এসব গুদামের জন্য ভাড়া দিতে হয় টিসিবিকে। বছরের বিভিন্ন সময়ে ভাড়া নির্ধারিত হয় বিভিন্ন রেটে।
টিসিবি সূত্র জানায়, চিনি, তেল, ছোলা, মসুর ডাল ও খেজুর ইত্যাদি মজুদের জন্য গুদাম নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে সারাদেশে ১৫টি গুদামে টিসিবি পণ্য মজুদ করে। এর মধ্যে মাত্র চারটি গুদাম টিসিবির নিজস্ব। ৭৫ হাজার ৪০০ বর্গফুটের এ চারটি গুদামের ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন। এ ছাড়া খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, মৌলভৗবাজার ও ময়মনসিংহে সাড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার গুদামে টিসিবি পণ্য সংরক্ষণ করে।
ওই সূত্র আরও জানায়, চাহিদার তুলনায় গুদাম অপর্যাপ্ত হওয়ায় রংপুর, বরিশাল, মৌলভীবাজার এবং ময়মনসিংহে মোট ১০ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন গুদাম ভাড়া করতে হয়। টিসিবির বাজার অপারেশন কার্যক্রম বছরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করতে হলেও ভাড়া-গুদামের জন্য ভাড়া দিতে হয় পুরো বছর। এছাড়া ভাড়া করা গুদামের মান সব সময় ভালো থাকে না বলে মজুদকৃত পণ্যের অপচয় হচ্ছে। নিজস্ব গুদামের স্বল্পতা থাকায় প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও রংপুরে ছয়টি গুদাম নির্মাণ করা হবে। এছাড়া মৌলভীবাজার ও রংপুরে দু’টি আঞ্চলিক অফিসও নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ ছাড়াও অন্য পণ্যের জন্য গুদামের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যাবে। সরকার প্রয়োজনীয় পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত এবং ভোক্তাকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ন্যায্য মূল্যে সরবরাহের লক্ষ্যে প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে।
টিসিবির আপদকালীন মজুদক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের জন্য গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হবে এসব উদ্যোগ। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। নানা কারণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তার কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখছে। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিধানে নিত্যপণ্য আমদানি করা, বাজার হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যের পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করবে সংস্থাটি। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে জরুরি পণ্যদ্রব্যের পর্যাপ্ত বাফার স্টক গড়ে তোলা এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মনিটরিং করা টিসিবির অন্যতম কাজ।
টিসিবি জানায়, আপদকালীন মজুদক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে টিসিবির ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। অপচয় কমানো ও গুণগত মান বজায় রেখে আদর্শ গুদামে আপদকালীন মজুদের রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। ভোক্তা বিশেষ করে দরিদ্র জনগণের জন্য টিসিবি পণ্যের বিক্রয় ও বণ্টন চ্যানেলের মাধ্যমে সেবা উন্নয়ন করতে হবে। বাজার মনোপলি ও সিন্ডিকেট ব্যবস্থা নিরসনের জন্য নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। টিসিবির ভাড়াজনিত ব্যয় কমিয়ে আর্থিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
টিসিবি সচিব এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, চাহিদার তুলনায় টিসিবির মজুদক্ষমতা কম। বেসরকারি গুদাম ভাড়া করে চলছে টিসিবি। এই জন্য আরও ছয়টি উন্নতমানের গুদাম নির্মাণ করবে টিসিবি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন পণ্যের মান ঠিক থাকবে অন্যদিকে সারা বছর গুদাম ভাড়া বহন করা থেকে রক্ষা পাবে টিসিবি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
এমআইএস/এইচএডি/