ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনা’র প্রভাবে বেড়েছে ফলের দাম

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০
করোনা’র প্রভাবে বেড়েছে ফলের দাম

ফেনী: চীনে চলমান নভেল করোনা ভাইরাস সংকটের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ফলবাজারেও। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ফেনীর বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা ভাইরাস ইস্যুতে এরই মাঝে বেড়ে গেছে ফলের দাম।  

বাজার ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফল ভেদে প্রতি কেজিতে খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৮০ টাকা।

আমদানিকারকরা জানান, এই মুহূর্তে চীন থেকে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের ফল বাজারে বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।  

ফেনীর সর্ববৃহৎ ফলের আড়ত মহিপাল ফল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক আবদুল মতিন জানান, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের ফলবাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। চায়না থেকে হানি ফুজি আপেল, ক্রাউন আপেল, গালা আপেল, লুগাম কমলা, ছোট কমলা, নাশপাতিসহ বিভিন্ন ফল আমদানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এসব আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে করে ফলের দাম বেড়ে যাচ্ছে।

মহিপাল আড়তের ফাইভ স্টার ফুড এজেন্সির মালিক ও ফল আমদানিকারক মো. খুরশিদ আলম জানান, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চীনের ফলবাজারে বার্ষিক ১৫ দিনের ছুটি ছিল। এর পরপরই দেশটিতে করোনা ভাইরাসের প্রভাব দেখা দেয়। ফলে দীর্ঘসময় ধরে চীন থেকে ফল আসছে না। বাজারে ফলের দাম এ কারণে বেড়ে চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ১০ দিন পর দেশের ফলবাজার চায়না ফল শূন্য হয়ে যাবে।

হাজী নজির আহমেদ গ্রুপের চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন বলেন, গত ২৫ দিন ধরে আমাদের কোল্ড স্টোরেজে কোনো চায়না ফল সংরক্ষণের জন্য আসেনি। গ্রাহকদের মাধ্যমে জানতে পারি, চীন হতে কোনো ফলই দেশে আমদানি হচ্ছে না।

ফলবাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে চায়না হানি ফুজি আপেলের ২০ কেজির কার্টন বিক্রি হচ্ছিল ১ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৫০ টাকায়। খুচরা বাজারে এ ফল প্রতি কেজি বিক্রি করা হতো ১১০ টাকায়, কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এবাদে পাইকারি বাজারে ক্রাউন আপেলের ২০ কেজির কার্টন বিক্রি হতো ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টাকায়। গালা আপেল ২০ কেজির কার্টন বিক্রি হতো ২ হাজার ১০০ টাকায়, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। ছোট চায়না কমলার ১০ কেজির কার্টন বিক্রি হতো ৮০০ টাকায়, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। নাশপাতি ৯ কেজির কার্টন বিক্রি হতো ৯০০ টাকায়, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

এদিকে এই অবস্থায় চায়না ফলের পাশাপাশি বাজারে অন্যান্য ফলের দামও বেড়ে চলেছে। মাল্টা মিশরীয় ফল হলেও এক সপ্তাহ আগে এর ১০ কেজির কার্টন যেখানে বিক্রি হতো ১ হাজার ৩৫০ টাকায়, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়।

ফেনী মহিপালের ফল ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) কালো আঙুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে এর কেজি ছিল ২৬০ টাকা।  

ট্রাংক রোডের ফল ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডালিমের দাম কেজি প্রতি  ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। যদিও আঙুর ও ডালিম এ দুই ফলই আমদানি করা হয় ভারত থেকে।

দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে ফল ক্রেতা তোফায়েল আহমেদ মিলন বলেন, ফলের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকলে তা ক্রমশ আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

ভারত থেকে ফল আমদানিকারী প্রতিষ্ঠান মৌসুমী ফল বিতানের মালিক রিপন জানান, ভারতে ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দেশেও প্রভাব পড়েছে। চায়না ফলের দাম বাড়ার সঙ্গে ভারতের ফলের দাম বাড়ার সম্পর্ক নেই।  

ফল আমদানিরকারক রিপন জানান, বাজারে চাহিদা থাকলে ফল আসবে। যখন যে দরে ফল কেনা হবে, সে হিসেবেই ফল বাজারে বিক্রি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০
এসএইচডি/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।