ঢাকা: উদ্যোগ নেওয়ার প্রায় দুই বছর অতিক্রম হলেও এখনো কার্যকর হয়নি আন্তঃব্যবহারযোগ্য (ইন্টারঅপারেবিলিটি) মোবাইল ব্যাংকিং সেবা।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর আন্তঃব্যবহারযোগ্য এমএফএস সেবা চালু করার চেষ্টা করেছিল।
দেশের প্রধান মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের এই সেবা প্রদানের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক গত সাত মাসে সেই প্রযুক্তি সমস্যা সমাধান করতে পারেনি।
মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি বিকাশ, এমক্যাশ, ইউক্যাশ এবং ইসলামি ওয়ালেট (ইন্টারঅপারেবিলিটি) আন্তঃব্যবহারযোগ্য সেবা প্রদানের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রথম দিন থেকেই।
এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা গ্রহণে গ্রাহকের কাছ থেকে যাতে অতিরিক্ত ফি নিতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক অপারেটরদের জন্য চার্জও নির্ধারণ করেছে।
অপর দিকে এক মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তরের পাশাপাশি আন্তঃব্যবহারযোগ্য ব্যাংক থেকেও মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে এবং মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের সুবিধা রাখা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে চারটি মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির গ্রাহকরা পুবালী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকসহ মোট ৫টি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে পারবেন।
আন্তঃব্যবহারযোগ্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হতে দেরির কারণ জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।
সম্প্রতি বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং ইকোসিস্টেম শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিযোগীতা কমিশনের চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম আন্তঃব্যবহারযোগ্য সেবা চালুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণকারীদের জন্য আন্তঃব্যবহারযোগ্য সেবাটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বাজারে আরও ভালো প্রতিযোগীতা নিশ্চিত করবে এবং সেবা দেবে।
মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক শারমীনা ইসলাম এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে সেন্ড মানি করতে না পারাকে সমস্যা মনে করেন।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আমি দোকান থেকে কোনো পণ্য কিনতে পারছি না। কারণ দোকানে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির পরিশোধ ব্যবস্থা আছে। এমনকি আমার পরিচিত কাউকে আমি টাকাও পাঠাতে পারি না, সে অন্য অপারেটরের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে বলেন।
তিনি আরও বলেন, এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রাহকদের জন্য আর সুবিধা নিয়ে আসবে।
২০১১ সালের ৩১ মার্চ ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট চালু হওয়ার পর থেকে শারমীনা ইসলামের মতো অনেকে এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকই প্রথমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তঃব্যবহারযোগ্য করার উদ্যোগ নেয় ২০১৯ সালে।
বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর আন্তঃব্যবহারযোগ্য সেবাটি চালু করার উদ্যোগ নেয়, ঠিক তখনই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে সেবাটি কার্যকর করার জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ই-কর্মাসভিত্তিক লেনদেনকে সহায়তা করার সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইন্টারঅপারেবিলিটি সেবাটি কবে নাগাদ চালু হবে এ বিষয়ে জানতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক, ইন্টারঅপারেবিলিটি সেবা উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত স্টার্টআপ বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুজিবুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২১
এসই/এজে