ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমানতের সুদ বৃদ্ধি নিয়ে গর্ভনরের সঙ্গে আলোচনা করবে এবিবি

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২১
আমানতের সুদ বৃদ্ধি নিয়ে গর্ভনরের সঙ্গে আলোচনা করবে এবিবি

ঢাকা: আমানতের সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের সঙ্গে বৈঠক করবে বেসরকারি ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।

ব্যাংকার্স সভা শেষে এবিবি গর্ভনর অথবা ডেপুটি গর্ভনরের সঙ্গে আমানতের সুদহার নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন এবিবির চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী রেজা ইফতেখার।

১১ আগস্ট ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব নির্ধারিত তারিখ রয়েছে।

এর আগে ৮ আগস্ট সব ধরনের মেয়াদী আমানতের সুদহার বেঁধে দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, তিনমাস বা তার বেশি মেয়াদী আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির চেয়ে কোনোভাবেই কম হবে না।

ব্যাংকাররা বলেছেন, মেয়াদী আমানতের সুদ বাড়ানোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সারাদেশে আর্থিক অন্তর্ভূক্তি কার্যক্রম ও ব্যাংকিং সেবা সম্প্রসারণের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তারা বলেন, এটা খুব পরিষ্কার  যে আমানতের সুদের হার নির্ধারণ বাজারের গতি মন্থর করে দেবে।

আমানতের ওপর সুদ বা মুনাফা হার অতিমাত্রায় হ্রাস পেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানতের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানতের সুদহার বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, তিনমাস বা তার চেয়ে বেশি মেয়াদী আমানতের সুদহার কোনোভাবেই গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হবে না। যদিও গত জুন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মেয়াদী আমানতের সুদ মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হলে আমানতের গড় সুদহার দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

দেশের একটি শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ভালো গ্রহীতারা এখনো ৫ থেকে ৬ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে। তাদের ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, অনেক ব্যাংক শহর, গ্রাম ও পল্লী এলাকায় সেবা প্রদানের জন্য শতভাগ পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) মেশিন স্থাপন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ব্যাংকিং, উপশাখা, অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমান বিনিয়োগ করেছে।

ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই আমানতের সুদহার নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে ব্যাংকারা সেবা প্রদানে নিরুৎসাহী হবেন।

এ বিষয়ে এবিবির চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বাংলানিউজকে বলেন, ১১ আগস্ট ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে গর্ভনরের সঙ্গে। সেই সভা শেষে যদি সুযোগ দেয় তাহলে আমরা বিবিধ বিষয়ের আওতায় গর্ভনর অথবা ডেপুটি গর্ভনরের সঙ্গে আমানতের সুদহার বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করবো। ওই দিন আমাদের ফোরামের সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা থাকবেন, গর্ভনর, ডেপুটি গর্ভনর থাকবে আমরা সেখানে আলোচনা করতে চাই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হবে কি-না জানতে চাইলে আলী রেজা ইফতেখার বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তর বিষয়ে আমরা আগে শুনতে চাই। আমানতের সুদহার বেঁধে দেওয়ার প্রভাব কি হতে পারে, কেন এটা করা হলো, এটার ফলে ব্যাংকিংখাতের কি হতে পারে। বেসরকারি ব্যাংকের প্রভাব কি হতে পারে, ইসলামী ব্যাংকের প্রভাব কি হতে পারে, সরকারি ব্যাংকের জন্য প্রভাব কি হতে পারে এসব বিষয়ে আলাপ করবো।

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় হ্রাস পাবে।

২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সবধরনের ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে আমানতের সুদহার। বর্তমানে কোনো কোনো ব্যাংকের মেয়াদী আমানতের সুদ আড়াই থেকে সাড়ে তিন শতাংশ। আমানতের সুদহার কমে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন সুদের ওপর নির্ভরশীল আমানতকারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২১
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।