ঢাকা: আমদানি করা যেসব পণ্যের দাম অসহনীয়, সেগুলোর শুল্ক কমানোর বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে স্টেকহোল্ডার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চিনি ও তেলের দাম ট্যারিফ কমিশনের মতে কতো হওয়া উচিত- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, দাম আমরা এ মুহূর্তে প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। তাহলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। তবে তেলের দাম এখন যেটা আছে ১৪৯ টাকা লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকিটা ক্যালক্যুলেশন হচ্ছে। এ মাসে কোনো বৃদ্ধিতে যাব না। মূলত যেটা হচ্ছে, সেটা হলো পর্যালোচনা। আশা করছি, আগামী মাসে প্রকাশ করা হবে।
চিনির বাজার অস্থিতিশীল, খুচরা মূল্য আমরা কতো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন বাজারে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় খুচরা মুল্যে চিনি বিক্রি হচ্ছে। আর টিসিবি ৫৫ টাকা কেজি দরে দিচ্ছে।
সরকারি চিনিকলগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি চিনিকলগুলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। সরকারিগুলোর উৎপাদিত চিনির পরিমাণ চাহিদার পাঁচ শতাংশ। এ কলগুলোতে ৬৫ থেকে ৬৯ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়। আর আমাদের চাহিদা ২৪ লাখ টন। সুতরাং সেটা দিয়ে ১৭ কোটি মানুষের চাহিদার বাজারে খুব বেশি প্রভাবিত করা যাবে না। অবশ্যই আমাদের আমদানি নির্ভর চিনিতেই থাকতে হবে। তবে এ কলগুলো চালু করে বাজারের কিছুটা চাহিদা মেটানো যাবে, সে বিষয়টা শিল্প মন্ত্রণালয় দেখবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে ফলে ভোক্তাদের সুবিধার্থে আমদানিতে পর্যায়ে শুল্কের কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম কমানোর একটা হতে পারে শুল্ক কমানো। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে এ ধরনের প্রস্তাব আগেও ছিল। আমরা এখন আবার একটা প্রস্তাব দেব। যেসব পণ্যের দাম অসহনীয়, সেগুলো পর্যালোচনা করে আমি এনবিআরকে অনুরোধ করব।
তিনি বলেন, আর একটি বিষয় হচ্ছে, সাপ্লাই চেইনে খুচরা পর্যায়ে যদি বেশি মুনাফা করা হয়, তা কমানোর প্রক্রিয়াটা একটু দীর্ঘ। কারণ এটা একটা প্রতিযোগিতামূলক বাজার, খুব বেশি হস্তক্ষেপ করলে ভালো ফল দেয় না। আর একটি পথ হচ্ছে, দেশের উৎপাদন বাড়ানো। সেখানেও সীমাবদ্ধতা আছে। চাইলেই রাতারাতি উৎপাদন বাড়ানো যায় না। জমির স্বল্পতাসহ অন্যান্য সমস্যা রয়েছে। সার্বিকভাবে আমরা চেষ্টা করছি।
বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা, টিকে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলাসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
জিসিজি/এসআই