ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘দর কমার সীমা নির্ধারণে স্থিতিশীল হবে পুঁজিবাজার’

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২২
‘দর কমার সীমা নির্ধারণে স্থিতিশীল হবে পুঁজিবাজার’

ঢাকা: পুঁজিবাজারে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে বলে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) শেয়ার দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণে পর বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটিই জানা গেছে।  

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেন, সূচকের টানা পতনে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। আমরা গতকালই বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিএসইসিকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম শেয়ারের দর কমার সীমা নির্ধারণ করতে। বিএসইসি আমাদের অনুরোধ রেখেছে। কমার সীমা নির্ধারণ এটি অনেকটা শেয়ারের রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করবে। শেয়ারের সেল প্রেসারও কমবে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টানা তিন মাস ধরে বাজারে নেতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়েছেন। শেয়ারের দর কমার সীমা নির্ধারণ ঠিক হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার জায়গাটা তৈরি হবে। এতে করে কিছু দিনের মধ্যেই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

তিনি জানান, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা কাল থেকে বাজারে বিনিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে।  

শেয়ারের দর কমার সীমা নির্ধারণ হওয়ায় সেল প্রেসার কমে যাবে এতে করে বাজারে তারল্য বাড়বে বলে মনে করেন বিনিয়োগকারী মশিউর রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে নিঃসন্দেহে বাজার ভালো হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে।

এ ব্যাপারে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, সূচকের পতনের কারণে সম্প্রতি বাজারে যে নেগেটিভ প্রভাব ছিল, সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে সেটা কেটে যাবে এবং বাজার স্থিতিশীল হবে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা কাল থেকে বিনিয়োগ করা হবে। শুধু তাই নয়, ব্যাংক ও নন ব্যাংকিং বিনিয়োগ বাড়াতে চেষ্টা করছে বিএসইসি। আগামীকালও ব্যাংকের সিইওদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে ব্যাংকের বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হবে। আশা করা যায় ব্যাংকের বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাবে।  

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামীকাল (০৯ মার্চ) থেকে শেয়ার দর কমার সর্বনিম্ন সীমা ২ শতাংশ কার্যকর হবে। তবে শেয়ার দর বাড়ার সীমা অপরিবর্তিত থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগের মতো দীর্ঘমেয়াদি হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২℅ সীমা তুলে নেওয়া হবে।

শেখ শামসুদ্দিন বলেন, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইসিবির মাধ্যমে মঙ্গলবার থেকেই এ বিনিয়োগ শুরু হয়েছে।

বিএসইসি কমিশনার বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের মৌলিক ও প্রধান কাজ। এজন্য আমরা নানাবিধ চেষ্টা করে থাকি। যার ধারাবাহিকতায় দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শেখ শামসুদ্দিন বলেন, ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ব্যবহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক। কিন্তু এখনো অনেক ব্যাংক ওই ফান্ড গঠন করেনি। কেউ কেউ ফান্ড গঠন করলেও তা ব্যবহার করেনি। এছাড়া পুঁজিবাজারে লেনদেনের গতি বাড়াতে ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কমিশন লেনদেন নিষ্পত্তির সময়সীমা টি+১ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে শেয়ারবাজারে টি+১ চালুর আগে প্রকৃত অর্থে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা, তা যাচাই করা হবে। কোন ইতিবাচক ফলাফল ছাড়া চালু করতে চাই না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২২
এসএমএকে/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।