বরিশাল: তুলনামূলকভাবে এবার এখনো নদীতে তেমন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার সমুদ্রে যাও বা মিলছে, তাও গতবারের তুলনায় বেশ কম।
ইলিশ আহরণ কম হওয়ার কারণ হিসেবে কম বৃষ্টি, বেশি তাপমাত্রা ও নদীতে পানির স্রোত-উচ্চতা কম থাকাকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে।
বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা হিলসা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এ মুহূর্তে যে ইলিশ আহরিত হচ্ছে তা কয়েকদিন আগের থেকে ভালো। কিছুদিন আগে তো নদীতে মাছই পাওয়া যেত না এখন কিছু পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন,সাগরে ইলিশ রয়েছে,যা আহরিত হচ্ছে তার থেকে বেশি আহরণ করার কথা এ সময়ে। গরম আবহাওয়ার কারণে উপকূল থেকে মাছগুলো একটু দূরে অবস্থান নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ ইলিশ মাছ গরম আবহাওয়া মানিয়ে নিতে পারে না। তাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যেখানে ইলিশ মাছগুলো রয়েছে, সেই পর্যন্ত আমাদের জেলেরা যেতে পারছেন না।
তিনি বলেন,নদী থেকে সাগরমুখী পানির চাপ যতো বেশি থাকবে ইলিশও ততো বেশি নদীতে চলে আসবে। যদিও এসব কিছুর পরও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশা করেন এই কর্মকর্তা।
জেলেরাও বলছেন,বর্ষা মৌসুম শেষ হতে চললেও তেমন একটা বৃষ্টির দেখা মেলেনি, বেশ গরমও রয়েছে। এ ধরনের আবহাওয়া ইলিশ উপযোগী নয়, এ কারণেই এবারে নদীতে ইলিশের তেমন এটকা দেখা মেলেনি।
বরিশাল নগরের পোর্টরোডস্থ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা বলছেন, নদীতে ইলিশের দেখা তেমন একটা না মেলার পাশাপাশি গত প্রায় দুমাস ধরে বিভিন্ন সময়ে বৈরী আবাহাওয়ায় জেলেরা সাগরে মাছ শিকারেও যেতে পারেননি অনেক দিন, তাই অনেকটা সময় ইলিশের আমদানি কম ছিল।
যদিও বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন,গত কয়েকদিন ধরে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ মণ ইলিশের দেখা মিলছে।
তিনি বলেন,পদ্মা সেতুর কারণে বর্তমানে কম খরচে সাগরের কাছাকাছি অবতরণ কেন্দ্র থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কপথে আহরিত মাছ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। সমুদ্র উপকূল থেকে এতদূরে তেল পুড়িয়ে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ নিয়ে না এসে ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনার সাগর থেকে কাছাকাছি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে যাচ্ছেন জেলেরা। যদিও বরিশালের অবতরণ কেন্দ্রে আমরা জেলে ও ব্যবসায়ী বান্ধব। বর্তমানে এখানে ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের আর কোনো অবতরণ কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা মাছ লোডিং-আনলোডিং করা হয় না।
এদিকে মাছের আমদানি কয়েকদিনে কিছুটা বাড়লেও দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, জ্বালানি তেলসহ সকল ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব ইলিশের ওপরেও পড়েছে।
বরিশাল মোকামের পাইকার ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, বর্তমান বাজারে আকার অনুযায়ী গোটলা ইলিশ মণ প্রতি ২৪ হাজার টাকা, ভ্যালকা ইলিশ ৩২ হাজার টাকা, এলসি ইলিশ ৪৪ হাজার টাকা, কেজি সাইজের ইলিশ ৫২ হাজার টাকা, ১ কেজি ২০০ গ্রামের ইলিশ ৫৪ হাজার টাকা এবং দেড় কেজি বা তার অধিক ওজনের ইলিশ ৬২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তার মতে, মাছের আমদানি আরও বাড়লে কিছুটা কমবে মাছের দাম।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২২
এমএস/এসআইএস