ঢাকা: সরকার রাশিয়া থেকে বেশি দামে গম কিনছে বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সরকার সঠিক দামেই গম কিনেছে, কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেছে মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে খাদ্যসচিব বলেন, টিআইবির মাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদন জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। এ ধরনের রিপোর্ট দিতে হলে আরও তথ্যবহুল হওয়া প্রয়োজন। আমরা রাশিয়া থেকে গম কিনছি, এটা সত্য। টিআইবি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, গম বেশি দামে কেনা হচ্ছে। আমি সরকারের অবস্থান জানাচ্ছি। রাশিয়া থেকে গম আনা হচ্ছে, এটা মোটেও বেশি দামে না। এটা করা হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক দামে। এটা আমাদের জন্য প্রয়োজন ছিল। এই ক্রয়ের ফলে খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা গমের ক্ষেত্রে স্বস্তিতে আছি।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্যের বাফার স্টক রাখতে হয়। জুনে আমাদের টার্গেট থাকে অন্তত ২ লাখ মেট্রিক টন গম আর ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল থাকতে হয়। জুনের মধ্যে দুর্ভাগ্যবশত আমাদের স্টক ১ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টনে চলে এসেছিল। এটা মূলত আমরা ব্যবহার করি প্রান্তিক মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনিতে দেওয়ার জন্য। এটা কমে যাওয়ার পর যখন আমরা গম আনার চেষ্টা করি তখন পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে একটি বাধা আসে যে, তাদের ওখানে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ভারত থেকে আনতে পারলে আমাদের খরচ কম হয়, সময় কম লাগে আমরা স্বস্তিতে থাকি।
ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, আমরা ৮ থেকে ১০টি দেশে চিঠি দেই। সব জায়গায় চেষ্টা করি যাতে এটা সংগ্রহ করা যায়। পরে অনেকে সাড়া দেয়, এর মধ্যে আর্জেন্টিনা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া দূরের দেশ হওয়ায় পরিবহন ব্যয় বেশি হওয়ায় সব ক্ষেত্রেই প্রতি টন ৫শ’ ডলারের বেশি দাম পড়ে যায়। রাশিয়া শুরুতে অমনোযোগী ছিল, কিন্তু পরে আমাদের যোগাযোগের পর আগ্রহী হয়। প্রথমে আমরা একটি মিটিং করি জিটুজি করার জন্য ২৩ জুন। এটা থেকে কোনো রেজাল্ট হয়নি। পরে আমরা কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করি। তখন তারা রাজি হয়। আমরা ২৪ আগস্ট চুক্তি করি ৪৩০ ডলার করে। একদম পরিষ্কার যে, দাম বেশি হয়নি।
খাদ্যসচিব বলেন, এফওবি প্রাইজ হলো যে দেশ রপ্তানি করছে সেই দেশের বন্দরের দাম। এখানে কোনো রকম পরিবহন দেবে না, শুধু গম দেবে। এটার সাথে আমাদের ৫টা ব্যয় যুক্ত হয়। লোডিং, জাহাজ ভাড়া, আনলোডিং, ইনসুরেন্স, বার্থ অপারেটর হ্যান্ডলিং ও লাইটেনিং। এটা হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়। যেদিন আমরা কিনেছি সেদিন এফওবি প্রাইজ ছিল ৩৩৩ ডলারের মতো। দাম এখন ৩৩৪.২৫ ডলার। এই বাকি খরচগুলো যুক্ত করে বাংলাদেশ লাভবানই হয়েছে। আমার দিক থেকে বলতে পারি, এখানে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ