ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে সূচকের পতনে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারে লেনদেন। বিদায়ী সপ্তাহে (২৫-২৯ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুই হাজার ৮০৪ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬২৫ টাকার লেনদেন কমলেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮ টাকা বেড়েছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে ভালো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার কারণে এ ক্যাটাগরি শেয়ারের লেনদেন কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত ফ্লোরে আটকে থাকা কোম্পানিগুলোর দিকে নজর দারি বাড়ানো।
এ ব্যাপারে সাধারণ বিনিয়োগকারী মাহবুব পলাশ বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই মাস ধরে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মত ভালো কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। বাজারে ক্রেতা না থাকায় ভালো শেয়ারের লেনদেন কমেছে। তবে এক্ষেত্রে বিএসইসির কোম্পানিগুলোর দিকে নজরদারি বাড়াতে হবে বলে তিনি জানান।
বাজার বিশ্লেষণ দেখা গেছে, গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন কমেছে ভালো মানের কোম্পানির। ভালো মৌলভিত্তির ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেন গত সপ্তাহে দুই ৩৮১ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার কমে গেছে। গত সপ্তাহে এ ক্যাটাগরির শেয়ার লেনদেন হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৬৩ কোটি ২৪ লাখ ৩১ হাজার টাকা। আর এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল সাত হাজার ৭৫৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ৭ হাজার ৩০৬ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০ হাজার ১১০ কোটি ৩৯ লাখ ০৮ হাজার ৭৮৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে দুই হাজার ৮০৪ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬২৫ টাকা কমেছে।
বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৩ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার ৪৭ টাকা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯১৪ কোটি ০৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন দুই হাজার ৮২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৩৮ হাজার ৪২ টাকা কমেছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১.১১ পয়েন্ট বা ০.৭৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৫১২.৮৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৭ পয়েন্ট বা ১.১৮ শতাংশ এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৩৫.২৭ পয়েন্ট বা ১.৪৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪১৯.৭৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩৩০.৪২ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ১৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫২টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) পৌনে এক শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৪.৭৯ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষে ১৪.৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.১২ পয়েন্ট বা ০.৮১ শতাংশ বেড়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি হলো- ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, ইস্টার্ন হাউজিং, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, জেএমআই হসপিটাল, ইউনিক হোটেল, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড, শাইনপুকুর সিরামিক, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম লিমিটেড ও সাইফ পাওয়ার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৩৪ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৬ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১২৫ কোটি ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ০৩৮ টাকা বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫৫.৫৮ পয়েন্ট বা ০.৮০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৮৯.২৮ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৯টির দর বেড়েছে, ১২৬টির কমেছে এবং ১৩২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
এসএমএকে/কেএআর