বগুড়া: আগাম আলু চাষে নেমে পড়েছেন বগুড়ার চাষিরা। জেলার ১২টি উপজেলায় এখনো পুরোদমে রোপা আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষ না হলেও অতিরিক্ত মুনাফার আশায় চাষিরা সবজি আবাদের জমিগুলোতে আগেভাগেই আলু চাষ শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত মুনাফার আশায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। এতে লাভবান হয়ে থাকেন তারা।
বগুড়া জেলায় ফসলি মাঠ ফেলে রাখেন না চাষিরা। তাই মৌসুমি বিভিন্ন সবজি আবাদের পর এবার নেমে পড়েছেন আগাম আলু চাষে। আগাম জাতের আলুতে বাড়তি মুনাফা চাষিদের আকৃষ্ট করে।
শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ ও বগুড়া সদরসহ কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখে যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে কাঁচা-পাকা ধান। আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে এ ধানগুলো কাটা ও মাড়াই শুরু হয়ে যাবে। তারপর এ জেলার চাষিরা একযোগে তাদের ফসলি মাঠে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করবেন। মাঠে মাঠে চাষিরা একদিকে তাদের জমিগুলো প্রস্তুত করতে হাল দিচ্ছেন, আলগা মাটি সমান করতে জমিতে মই দিচ্ছেন, অন্যদিকে আলু বীজ বপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কেউ কেউ। কখনো বাতাস আবার কখনো ভ্যাপসা গরমের মধ্যেই চাষিরা কাজ করে চলেছেন।
সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের কালিবালা এলাকার চাষি আব্দুস সালাম ও মোনাজাত মিয়া বাংলানিউজকে জানান, অনেক চাষির মতো তারাও বাড়তি মুনাফার আশায় আগাম আলু চাষ করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে গেল বছরের মতো এ বছরও আলু বীজের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। বীজ কিনতে অনেক চাষি হিমশিম খাচ্ছেন।
দ্বিগুণ দামে আলু বীজ কিনতে হচ্ছে বলে জানান এই চাষিরা। বর্তমানে বাজার থেকে তারা লাল পাকরি আলুর বীজ কিনছেন প্রতিকেজি ৪৫-৫৫ টাকা দরে এবং কার্ডিনাল প্রতিকেজি ৩৫-৪৫ টাকা দরে। তবুও অধিক লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন তারা। কঠোর পরিশ্রম আর অর্থ ব্যয় শেষে কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন করতে পারলেই তাদের স্বপ্নপূরণ হবে।
শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলার চাষি শিবলি হাসান ও শিমুল বিশ্বাস জানান, তাদের উপজেলায় সিংহভাগ জমিতে এখনও ধান রয়েছে। তবে যে সব জমির ধান কাটা হয়ে গেছে বা যেগুলোতে মৌসুমি বিভিন্ন সবজি লাগালো হয়, এমন জমিগুলোতে আলু চাষের প্রস্তুতি চলছে। বাকি জমিগুলোর ধান কাটা শেষ হওয়ার অপেক্ষা। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই বাদবাকি ধান কাটা হয়ে যাবে। তারপরই একযোগে চলবে আলুর আবাদ। এ মৌসুমে আলুতে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফরিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। আলু চাষে প্রয়োজন শুকনো মাটির জমি। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেকেই তাদের জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু করেছেন। রোপা আমন কাটার পর ওই সব জমিতে একযোগে আলুর আবাদ শুরু হয়ে যাবে। এ জেলার চাষিরা আগাম আলু চাষে বেশ লাভাবান হয়ে থাকেন বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২২
কেইউএ/এমজেএফ