ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অবরুদ্ধের ৫ ঘণ্টা পর মুক্ত এমসি কলেজের অধ্যক্ষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪
অবরুদ্ধের ৫ ঘণ্টা পর মুক্ত এমসি কলেজের অধ্যক্ষ

সিলেট: সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারি চাঁদ কলেজের (এমসি কলেজ) অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখেন।

এ কারণে ভেতরে অবরুদ্ধ ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা।  

অবশেষে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের তালা খুলে দেন আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সংকট, ছাত্রাবাসের বঙ্গবন্ধু হলের পানি সমস্যা ও ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের দাবিতে অধ্যক্ষকে অফিসে অবরুদ্ধ রেখে বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।  

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের মধ্যস্থতায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হন সিলেটের মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ।  

শিক্ষার্থীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে উঠে এমসি ক্যাম্পাস। অধ্যক্ষ দীর্ঘ চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলামের মধ্যস্ততায় শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে রাজি হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।  

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন থেকে ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক সংকট, হলের পানি সমস্যা নিরসন হচ্ছে না ও ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণও হয়নি। এসব দাবি নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি না পারলে আমরা কার কাছে যাবো।  

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের। এ বিভাগে মাত্র চারজন শিক্ষক ছিলেন। গত কয়েক মাস থেকে বিভাগটিতে একজন শিক্ষকও নেই। এছাড়া ছাত্রাবাসের বঙ্গবন্ধু হলের পানি সমস্যা সমাধানের জন্য বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কোনো প্রতিকার হয়নি।  

আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার হোসেন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত হয়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। দ্রুত এ সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।  

এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেন, যেসব ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন, এসবের সমাধান দীর্ঘস্থায়ী। হুট করেই কাটানো সম্ভব নয়। ছাত্রাবাসে পানি সংকট সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে একটা লাইন দিয়েছি। আর শিক্ষক সংকট সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এরই মধ্যে আলোচনা করেছি। খুব দ্রুত সমাধান হবে আশাবাদী তিনি।  

এদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম, সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুহেল আহমদ, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার হোসেন রাহীসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠক শেষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ।  

এ সময় অধ্যক্ষ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘তোমাদের সমস্যা মানে আমার সমস্যা। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এবং বঙ্গবন্ধু হলের পানি বিষয়টি আগামী রোববারের আগেই সমাধান হবে। আর ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের বিষয়টি লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। ’

অধ্যক্ষের এ আশ্বাসের পর ছাত্রলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।