ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবিতে ইফতারে এক ছাদের নিচে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
ঢাবিতে ইফতারে এক ছাদের নিচে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে একসঙ্গে ইফতার করেছেন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনের নেতারা।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তারা অংশ নেন।

 

এতে সভাপতিত্ব করেন ডুজার সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি।  

‘শিক্ষাঙ্গনে সংকট: ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক।  

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও হল প্রাধ্যক্ষরা।  

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন ও সদস্য সচিব নাহিদ হাসান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) রাগীব নাঈম, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ক্যাফেটেরিয়ায় প্রবেশ করেই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অন্যান্য সংগঠনের নেতারাও সবার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা ছাত্রনেতাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক বক্তব্য শুনেছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক।  

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করে।

উপাচার্য বলেন, নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি। তবে এ দায়িত্ব প্রশাসন বা কোনো ছাত্রসংগঠনের একার নয়। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করবে। তাহলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেস্ট হিউম্যান রিসোর্স প্রোভাইড করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, লাইব্রেরি সংস্কার, আবাসন সংকট সমাধানের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি, মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র পালটে দিতে পারবো এবং শিক্ষার্থীদের অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমরা ডাকসু নির্বাচনকে অস্বীকার করি না। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে কখন করা যায়, তা জানা যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, সাংবাদিক সমিতির কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন সঠিক তথ্য-উপাত্ত গ্রহণ করে সংবাদ পরিবেশন করে। এখানে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শের লোকদের দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উপস্থাপন করে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল ও পাকিস্তান আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন পরিবর্ধন হয়েছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও পরিবর্তন আনা জরুরি।  

তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও প্রশাসনের সবাইকে অনুরোধ জানাই, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় আরও উন্নয়ন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের আস্থার সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হয়।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক চর্চায় ডাকসুর ভূমিকা রয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকারও। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র রাজনীতিকে আরও স্মার্ট ও যুগোপযোগী করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরি। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাস সহিংসতা কমিয়ে আনা সম্ভব। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট, লাইব্রেরি সংকট ও অন্যান্য সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ঢাবি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, আজ ছাত্রদলের নেতাদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে রাখা হয়েছে, যা আধুনিক যুগের ছাত্র রাজনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাকসুর নির্বাচন যেন দ্রুত হয়।  

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের মিটিং করা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের অবাধ নির্বাচন ও বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে। হলগুলো রাজনৈতিক সংগঠনের কাছ থেকে মুক্ত করে শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।