ঢাকা: বুয়েটে আন্দোলনের ওপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নতুন কৌশলে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে শিক্ষক সমিতি।
এবার তারা ‘বুয়েট পরিবার’ এর ব্যানারে আন্দোলন চালানোর প্রস্ততি নিচ্ছেন।
অবশ্য, সমিতির পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে।
এদিকে, উপাচার্য ও উপউপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট জটিলতার মধ্যে দীর্ঘ ৪৪ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার খুলেছে বুয়েট। প্রথম দিনে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা ফিরতে শুরু করলেও কোন ক্লাস হয়নি। ক্যাম্পাস ছিল শান্ত।
তবে আন্দোলন বন্ধ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর জন্য আদালতের দেওয়া নির্দেশ মেনে প্রথম দিনেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী সোমবার ও মঙ্গলাবার যথাক্রমে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সভা ডেকে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম নজরুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবশে নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উপ-উপাচার্য বাংলানিউজকে বলেছেন, “প্রথম দিন শিক্ষার্থী কম আসায় কোন ক্লাস হয়নি। আদালতের দেওয়া নির্দেশ মেনে নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তির আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আশা করি, চলতি সপ্তাহেই একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা সম্ভব হবে। ”
প্রসঙ্গত, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য অপসারণের দাবিতে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের বিরুদ্ধে এক অভিভাবকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া, বুয়েটে চলমান আন্দোলন, ধর্মঘট কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন, ধর্মঘটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বুয়েট ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের আইজি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে বাধ্য হয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার ক্যাম্পাস খুললেও আন্দোলনরত শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও একেবারে কম। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে শিক্ষক নেতারা কৌশল পাল্টে সমিতির ব্যানারে কোনো আন্দোলন কর্মসূচিও পালন করছেন না। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিক্ষকেরা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে দূরে থাকছেন।
শনিবার ক্যাম্পাসে শিক্ষক নেতাদের কয়েক জনকে কালো রঙের টি-শার্ট পরতে দেখা গেছে। এসব টি-শার্টের সামনের দিকে ইংরেজিতে লেখা ‘সেভ বুয়েট, রিমুভ ভিসি-প্রোভিসি’। পেছনের দিকে বাংলায় লেখা ‘বুয়েট বাঁচান, ভিসি-প্রোভিসিকে অপসারণ করুন’।
অন্যদিকে, নতুন কৌশলে ‘বুয়েট পরিবার’ এর ব্যানারে আন্দোলনের লিফলেট বিলি করার সময় শিক্ষক নেতাদের কয়েক জনকে দারোয়ানরা চিনে ফেলায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মেকানিকাল বিভাগের প্রধান ড. এহসান ও ইপিই বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ হীন আজিমের নাম প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সমিতির সেক্রেটারি অধ্যাপক আশরাফুল ইসমলাম সাংবাদিকদের কাছে তাদের নতুন কৌশলের কথা অস্বীকার করে বলেছেন, “আমরাতো কোনো আন্দোলন করছি না। যারা করছেন তারা ব্যক্তিগত উদ্যোগে করছেন। ”
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১২
এমএন/সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর