ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিভাগ ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার দাবি জাবি শিক্ষকদের

জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১২

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তির জন্য বিভাগ ভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

শুক্রবার দুপুরে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান।



বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার বিভাগ ভিত্তিক পদ্ধতি পরিবর্তন করে অনুষদ ভিত্তিক করা হয়েছে। এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে ওএমআর যন্ত্রের মূল্যায়ন মাধ্যমে অতি দ্রুত ফলাফল ঘোষণা হচ্ছে। এতে প্রশ্নপত্র প্রণয়নেও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ একেবারেই কমিয়ে ফেলা হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষকদের শ্রম ও সময় বেঁচে গেলেও বিশেষ বিশেষ বিভাগগুলোর উপযোগী শিক্ষার্থী বাছাইয়ের পরিবর্তে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে উঠেছে যেনতেন ভাবে ভর্তিচ্ছুদের ছাঁটাইয়ের একটি মাধ্যম। এতে সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হচ্ছে।

শিক্ষকরা বলেন, গত কয়েক বছরে আগের বছরগুলোর তুলনায় শিক্ষার্থীদের গড় মান অনেক খারাপ হয়েছে। বিষয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের সাযুজ্য না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই ভালো ফলাফল করছেন না। চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফেল করার হার কোনো কোনো বিভাগে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

তারা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্য কেবল বিপুল সংখ্যক ভর্তিচ্ছুদের ভেতর থেকে ছাঁটাই করে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা নয়। একেকটি বিভাগের স্বাতন্ত্র্য অনুযায়ী ওইসব বিষয়ের জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের কার্যকরভাবে বাছাই করাই এর উদ্দেশ্য, যা কেবল বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা প্রণীত উপযুক্ত একটি প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে হতে পারে। এ প্রশ্নপত্র প্রনয়নের জন্য বিভাগ থেকে একজন দু’জন শিক্ষকের প্রতিনিধিত্বের চেয়ে পুর্ণাঙ্গ একটি কমিটির মাধ্যমে যথাযথভাবে হতে পারে।

বিবৃতিতে শিক্ষকরা আরো বলেন, ‘‘বিভাগ ভিত্তিক পরীক্ষা না হওয়ায় আমরা লক্ষ্য করেছি, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পরবর্তীতে বিভাগ পরিবর্তন করেন বা ড্রপ-আউট হন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের অপচয় ঘটায় এবং অন্যদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। অনুষদ ভিত্তিক পরীক্ষায় বিভাগগুলো থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্রে আমরা লক্ষ্য করেছি অসংখ্য ভুল ও অনেক অযত্নের ছাপ। অনিয়ম-দুনীর্তির ঘটনাও অনেকেই লক্ষ্য করেছেন। শিক্ষার্থী বাছাইয়ে উপযুক্ত প্রশ্নপত্র প্রণয়নে বিভাগের শিক্ষকদের অংশগ্রহণকে কেন খাটো করা হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রশাসন যদি অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এ কাজটি করে থাকে, তবে পুনর্বার এ পদ্ধতি বহাল করার আগে বিভাগের শিক্ষকদের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে হলেও অংশগ্রহণ করতে দেয়া বাঞ্ছনীয়। ’’

‘‘আমাদের দাবিগুলো হলো, ভর্তি পরীক্ষা বিভাগ ভিত্তিক হতে হবে, বিভাগীয় শিক্ষা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত ৫/৬ জনের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকবে, যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নে বিভাগীয় কমিটি শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা যাচাইয়ের উপযুক্ত পদ্ধতি স্বাধীনভাবে অনুসরণ করবেন। ’’

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, অধ্যাপক মানস চৌধুরী, শরমিন্দ নিলোর্মী, স্বাধীন সেন, মাসউদ ইমরান, মাহমুদুল সুমন, নাসরিন খন্দকার, মুজীবুল আনাম, খন্দকার হালিমা আখতার রিবন, সুমন সাজ্জাদ, হিমেল বরকত, আনিছা পারভীন, সায়েমা খাতুন, নওরীন তাবাচ্ছুম, সাহিদ সুমন, রায়হান রাইন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তির জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সকাল দশটা থেকে ৩ অক্টোবর রাত বারোটা পর্যন্ত টেলিটক মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। লিখিত পরীক্ষা আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।


বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১২
ওয়ালিউল্লাহ/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।