ঢাকা, বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ২৮ আগস্ট ২০২৪, ২২ সফর ১৪৪৬

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষায় আরও বেশি শিক্ষার্থীর জন্য দুয়ার খুলছে রাশিয়া

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৪
উচ্চশিক্ষায় আরও বেশি শিক্ষার্থীর জন্য দুয়ার খুলছে রাশিয়া

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় রাশিয়া অনেকটাই পিছিয়ে। তবে অন্যান্য দেশের মতো বর্তমানে রাশিয়াতেও প্রতি বছর বাড়ছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা।

বিশেষ করে রাশিয়ায় মেডিসিন ও মেডিক্যাল নিয়ে পড়শোনাতে বর্তমানে বেশ আাগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

তবে এতদিন শুধু ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের মাধ্যমেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী রাশিয়া যেতেন পড়ালেখার জন্য। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও ছিল বেশ হাতেগোনা। কিন্তু বর্তমান চাহিদার প্রতি নজর রেখে আর শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে যাত্রা শুরু করলো দিগো ইন্টারন্যাশনাল।

ব্যাচেলর বা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় রাশিয়ায় বৃত্তি পাওয়া বেশ সহজ। কারণ, এতে আবেদন করার প্রতিযোগী কম। বর্তমানে রুশ সরকার প্রতিবছর ১২৪ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ বা পূর্ণবৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। একইসাথে প্রতিমাসে বেশ খানিকটা অর্থ দেওয়া হয় স্টাইপেন্ড হিসেবে। এর মাধ্যমেও ডর্ম ফি বা থাকার খরচটিও উঠে আসে। ফলে পূর্ণ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য রাশিয়ায় খাবার বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচটিই নিয়ে ভাবতে হয়। আর সেটি যে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম, তা সহজেই অনুমেয়।

ফুল-ফান্ডেড বৃত্তি ছাড়াও রাশিয়ার আরও দুই ধরনের বৃত্তি আছে। প্রথমত, ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিয়ের বেশ খানিকটা মওকুফ করা হয়। অন্যদিকে, প্রতি বছরই আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, জাতীয় বা অন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েই বিভিন্ন অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এই অলিম্পিয়াডগুলোতেও ভালো ফলাফল করে বড় অঙ্কের বৃত্তি পাওয়া যায়। সেসব ফুলফান্ডেড বৃত্তিসহ অন্যান্য বৃত্তিগুলো নিয়েই কাজ করবে দিগো ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া থাকবে নিয়মিত কনসালটেন্সিও। এছাড়াও রাশিয়াতে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে বিশ ঘণ্টা পার্ট-টাইম কাজের সুযোগও রয়েছে।

সম্প্রতি (২২ আগস্ট) পাবনার ঈশ্বরদীতে দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার জাতীয় পতাকা দিবস পালন করা হয়। সে আয়োজনেই যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয় দিগো ইন্টারন্যাশনালের। এসময় আয়োজনে ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ, ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাসের সাবেক মন্ত্রী- কাউন্সিলর আন্দ্রে স্টারকভ, রুবলিভা উলিয়ানা, পাবনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদার, ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের গবেষনা অধ্যাপক ডঃ রমিত আজাদ, খায়রুল গ্রুব অব লিমিটেডের পরিচালক আলহাজ্ব খায়রুল ইসলাম, ডিগো ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হাসান ইমাম উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন রাশিয়ার রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাই অ্যান্ড ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সিআইপি প্রকৌশলী আলমগীর জলিল এবং দিগো ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক প্রকৌশলী হাসান ইমাম।

এদিন দুই দেশের  জাতীয় পতাকা প্রদর্শন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। এছাড়াও দিনব্যাপী আর্ট সেমিনার, কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, পুরষ্কার বিতরণ, কেক কাটা সহ জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ শতাধিক শিক্ষক, সাংবাদিক সহ শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। তাদের মাঝে আর্ট পেপার, রঙ পেন্সিল, চকলেটসহ বিভিন্ন উপহার ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আয়োজনে আয়োজনে ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ। বর্তমান ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার জন্য দক্ষ জনশক্তি খুবই প্রয়োজন। রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের কারণে, রাশিয়ান সরকার ধীরে ধীরে বৃত্তির সংখ্যা ১২৪-এ উন্নীত করেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আর ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের সহযোগিতায় দিগো ইন্টাপরন্যাশনালের যে কার্যক্রম, তাতে এই পরিধি আরও বিস্তৃত হবে বলে আমি আশাবাদী।

প্রকৌশলী আলমগীর জলিল বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ‘মৈত্রী ও সহযোগিতা’ চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে রাশিয়ায় পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। রাশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য শাখার সব বিষয়ে পড়া সম্ভব। ব্যবসা, অর্থনীতি, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে গভীর  সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। আমরা আশা করি এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং এদেশের আরও অনেক বেশি শিক্ষার্থী রাশিয়ায় তাদের উচ্চ শিক্ষার অবস্থান তৈরী করে নেবে। একই সাথে আমরা বিভিন্নভাবে রাশিয়ার কাছে কৃতজ্ঞ। সেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশেই রাশিয়ান জাতীয় পতাকা দিবস এমন জমকালোভাবে উদযাপন করা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।