ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ: ৪১ বছরে হয়নি, হয়েছে ৩ বছরে!

ছাদেক আহমদ আজাদ, বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১২
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ: ৪১ বছরে হয়নি, হয়েছে ৩ বছরে!

বিয়ানীবাজার(সিলেট): ‘সম্পূর্ণ বখাটেমুক্ত’, ‘পরিচয়পত্র’ দেখিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে হয় শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসে সব ধরনের পোস্টার লাগানো ও দেওয়ালে লেখা নিষেধ।

দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ, অনার্স ও বিএসসি (পাস) কোর্স চালু। ফলাফলও সন্তোষজনক। এ চিত্র সিলেটের বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের।

প্রতিষ্ঠার ৪১ বছরে এ কলেজের যে উন্নয়ন হয়নি, তা মাত্র ৩ বছরে সম্ভব হয়েছে। বিয়ানীবাজাবাসীর কাছে এটা ঠিক ম্যাজিকের মতোই।

আওয়ামী লীগের সরকারের ৩ বছরে এ পরিবর্তন হয়েছে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের। এ সময়ের মধ্যে কলেজের অবকাঠামো উন্নয়নসহ বাইরের পরিবর্তন যেমন এসেছে, তেমনি সিলেটের মধ্যে এ কলেজটি পেয়েছে পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজের মর্যাদা।

শুরুর কথা: বিয়ানীবাজার কলেজের গোড়াপত্তন ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৮ সালের ১৫ আগস্ট। ‘ক্ষুদে নবদ্বীপ’খ্যাত পঞ্চখণ্ড তথা বিয়ানীবাজারের ভূমিপুত্র শিক্ষাদরদী স্বর্গীয় প্রমথ নাথ দাসের দান করা ৫ একর ভূমির ওপর এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

এরপর ১৯৮৮ সালের ৩০ জুলাই জাতীয় পার্টির আমলে কলেজটি জাতীয়করণ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

কলেজের প্রথম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন মো. ইমদাদুর রহমান। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ জন শিক্ষক বিভিন্ন মেয়াদে অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বর্তমান অবস্থা: বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ, ৩ বিষয়ে অনার্স ও বিএসসি (পাস) কোর্স ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের সাড়ে ৩ বছরের উন্নয়ন কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ৪১ বছরের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

বিশেষ করে কলেজের প্রবেশদ্বারে নির্মিত শহীদ মিনার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুধীজনের নজর কাড়ে। এখানে দ্বিতল বিশিষ্ট শিক্ষক ডরমেটরি ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখতে বর্তমান সরকারের আমলে ১৮ জন শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সৃষ্ট ৪১ পদের মধ্যে ৩৪ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স কোর্স চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে এ কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার ২শ ২৬ জন।

বিএ ৩য় বর্ষের ছাত্র মাহমুদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এমন একটি কলেজ পড়তে পেরে গর্ববোধ করেন তিনি। কলেজের শৃঙ্খলা তার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।

একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী এমি বাংলানিউজকে জানান, এখন এ কলেজের স্বর্ণযুগ চলছে। এ সময়ে এখানে ভর্তি হতে পেরে নিজেকে তিনি ভাগ্যবতী মনে করছেন। তবে, কলেজের নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা থাকলে দূর-দূরান্তের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য সুবিধা হতো।

সূত্র মতে, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা মাথায় রেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ আরও ৫২টি শিক্ষকের পদ সৃষ্টির জন্য সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার কথা রয়েছে।

এ সরকারের সময়েই প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও পৃথক দু’টি পুরনো একতলা ভবন ভেঙে ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনে রূপান্তর করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ বাংলানিউজকে জানান, একমাত্র শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের কারণে কলেজের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত হয়েছে।

এ জন্য তিনি কলেজের শিক্ষক-ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কলেজে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন অধ্যক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১২
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর
বুধবার পড়ুন- হবিগঞ্জের বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।