রাবি: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে ধাওয়া দিয়েছেন কর্মচারীরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া সাতটি পদের বিপরীতে ১৫ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।
এই নিয়োগ বাতিল করে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের মধ্য থেকে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে সকাল ৯টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয় ‘কর্মচারী সমিতি’ ও ‘মাস্টার রোল কর্মচারী সমিতি’র সদস্যরা।
বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো. মর্ত্তুজা আলী ও রেজিস্ট্রার আশরাফুল আলমসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা শনিবার তাদের কার্যালয়ে আসেননি। তবে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অফিসে আসেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক কামরুজ্জামান রিপন।
এ সময় কর্মচারীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি আধাঘণ্টা পরে আলোচনায় বসার কথা জানান।
এর একপর্যায়ে তিনি আলোচনা না করেই দপ্তর থেকে বের হয়ে প্রশাসন ভবনের পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে কর্মচারীরা সেখানে এসে তাকে ধাওয়া দেন।
কর্মচারীদের ধাওয়া খেয়ে তিনি দ্রুত ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান। পরে নিয়োগ-বঞ্চিত কর্মচারীরা তাঁর অফিসের জানালার কাচ ও নেমপ্লেট ভাঙচুর করে।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি মুরাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, অস্থায়ী লোকদের স্থায়ীভাবে নিয়োগ না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টাকার বিনিময়ে বাইরের নতুন লোকদের নিয়োগ দিয়েছে।
সিন্ডিকেটের ওই নিয়োগ বাতিল করার পাশাপাশি মাস্টার রোলে কাজ করা লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে টানা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু প্রকৗশল পরিষদ রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক শাহনেওয়াজ সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিধিমালা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনে প্রকাশিত পদের অর্ধেক অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থেকে নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু সেই নিয়ম না মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ দিয়েছেন। ’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘শুক্রবারের নিয়োগে সহকারী টেকনিশিয়ান পদে নিয়োগ পেয়েছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের ভাই রাসেল। ডেটা প্রসেসর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিনের ভাই ইনজামুল হক।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মর্ত্তুজা আলী, রেজিস্ট্রার আশরাফুল আলম ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক কামরুজ্জামান রিপনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিএম শামসুন নূর বাংলানিউজকে বলেন, রুয়েটে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় সেখানে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪