ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ২১৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
সরকারি তহবিলের অভাব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনার কারণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থাপন করা হয়নি শহীদ মিনার।
ফলে, ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেও এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সর্ম্পকে ধারণা নেওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাম পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
শহীদ মিনার না থাকা কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি এলেই নিজেদের উদ্যোগে কলা গাছ পুঁতে বাঁশ, কাঠ ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার বানিয়ে সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এছাড়া জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই মাতৃভাষা দিবসের কোনো কর্মসূচি পালন করা হয় না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ৯টি উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি মোট ৩৫৪টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ২১৩টিতেই শহীদ মিনার নেই।
সূত্র জানায়, সদর উপজেলার ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪টিতে, আশুগঞ্জ উপজেলার ২৬টির মধ্যে ১৫টিতে, বিজয়নগরের ৩৪টির মধ্যে ২৮টিতে, কসবার ৭২টির মধ্যে ৩৯টিতে, আখাউড়ার ২৩টির মধ্যে ১৭টিতে, সরাইলের ২৪টির মধ্যে ১২টিতে, নাসিরনগরের ২৭টির মধ্যে ১৬টিতে, নবীনগরের ৫৮টির মধ্যে ৩৪টিতে ও বাঞ্ছারামপুরের ৩৬টির মধ্যে ১৮টিতেই কোনো শহীদ মিনার নেই।
সূত্র আরও জানায়, খোদ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র কালিবাড়ি মোড়ে অবস্থিত সিটি মডেল কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়, আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কোকিল টেক্সটাইল মিল উচ্চ বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। অথচ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করার নির্দেশ রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের উদ্যোগে মাতৃভাষা দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। সেখানে কেবল শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দিলেও দূরত্বের কারণে গ্রামের শিক্ষার্থীদের আসা সম্ভব হয় না।
ফলে, তারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব সর্ম্পকে ধারণা নেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। এজন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার স্থাপন জরুরি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির পরিচালক জয়দুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শহীদ মিনার না থাকার কারণে গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ থাকে। ফলে, নীরবে নিভৃতেই পেরিয়ে যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো তাৎপর্যপূর্ণ একটি মহান দিন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, শহীদ মিনার না থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপজেলা ভিত্তিক তালিকা ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪